খালাস রাজউক কর্মচারীর ১১ বছরের কারাদণ্ড

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদনসংক্রান্ত ৫৭ নথি গায়েবের অভিযোগে পাঁচ বছর আগে দুদকের করা মামলায় রাজউকের এক করনিককে (ক্লার্ক) তিনটি ধারায় ১১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতে ওই মামলায় প্রায় তিন বছর আগে খালাস পেয়েছিলেন রাজউকের সাবেক ইস্যু ক্লার্ক (বর্তমানে স্টেট সেকশনের স্টেনো ক্লার্ক) মো. শফিউল্লাহ।

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিল মঞ্জুর করে আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। একই সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে শফিউল্লাহকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী এ কে এম ফখরুল ইসলাম শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

শফিউল্লাহকে খালাস দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করে হাইকোর্ট ওই রায় দেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় শফিউল্লাহকে দোষী সাব্যস্ত করে হাইকোর্ট দণ্ডবিধির ২০৪ ধারায় ২ বছর, ২১৭ ধারায় ২ বছর এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় ৭ বছরসহ মোট ১১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। তিনটি ধারায় দেওয়া সাজা একসঙ্গে চলবে বলে আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান শফিউল্লাহর আইনজীবী ফখরুল ইসলাম।

আইনজীবী সূত্র বলেছে, তথ্য গোপন ও নথি গায়েবের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ওই মামলাটি করে দুদক। মামলার অভিযোগ, চাঁদপুরের মতলবের রসুলপুর এলাকার শফিউল্লাহ অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের করে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য অবহেলার মাধ্যমে রাজউকের বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদনসংক্রান্ত ৫৭টি নথি অথরাইজড অফিসার-১ ও ৩-এর দপ্তরের রেকর্ড রুমে না পাঠিয়ে সেগুলো বিনষ্ট ও গায়েব করেছেন। এই মামলায় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ রায় দেন। রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় শফিউল্লাহকে খালাস দেওয়া হয়। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্টে আপিল করে দুদক, যার ওপর আজ রায় দেওয়া হয়।