দুস্থ শিশুদের মুখে হাসি ফোটালেন তিনি

নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা পেয়ে আনন্দিত দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর মাড়াষ এতিমখানার ২৬ শিশু। ছবি: এএসএম আলমগীর
নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা পেয়ে আনন্দিত দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর মাড়াষ এতিমখানার ২৬ শিশু। ছবি: এএসএম আলমগীর

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের নুর আলম (৯)। নুর আলমের জন্মের পর মা–বাবা আলাদা হয়ে যান। এক বছর আগে বাবা নুর আলমকে ফতেহপুর মাড়াষ এতিমখানায় ভর্তি করান। এরপর আর কোনো দিন খোঁজ নিতে আসেননি। শুধু বাবা নয়, কেউই আর নুর আলমের খোঁজ নিতে আসেননি। নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামার শখ তার, তবে সেই শখ পূরণের সামর্থ্য তার নেই। স্বভাবতই মন খারাপ হতো তার।

শুধু নুর আলম নয়, ওই এতিমখানায় থাকা আরও ছয় শিশুর মা–বাবার বিচ্ছেদ হওয়ায় কেউ কখনো খোঁজ নিতে আসেন না। আর ২০ শিশুর কারও বাবা নেই কিংবা কারও মা নেই। অন্যদের মতো নতুন পোশাক জুটত না তাদের। তবে আজ মঙ্গলবার নুর আলমসহ ওই এতিমখানার ২৬ শিশুর মুখে প্রাপ্তির হাসি ফুটিয়েছেন নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মশিউর রহমান। আজ বিকেলে ইউএনও নিজ খরচে ওই ২৬ শিশুকে নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা দিয়েছেন।

এতিমখানার সুপার মিনহাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এতিমখানায় ২৬ দুস্থ শিশু আছে। সরকারের বরাদ্দ এবং সমাজের বিত্তবান মানুষের সাহায্য নিয়ে এখানে শিশুদের পাঠদান করা হচ্ছে। নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামার খুব শখ ছিল শিশুদের। একদিন দুপুরে হঠাৎ ইউএনও এতিমখানায় এসে এতিমখানার সামগ্রিক খোঁজ নেন। শিশুদের কাছে তাদের কী প্রয়োজন, জানতে চান। এ সময় শিশুরা ইউএনওকে নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামার শখের কথা বলে। এরপর স্থানীয় একজন দরজি এসে শিশুদের পোশাকের মাপ নিয়ে গিয়েছিলেন। আজ বিকেলে ইউএনও এসে সব শিশুকে নীল পাঞ্জাবি-পায়জামা উপহার দেন। ইউএনওর এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সায়েম সবুজ বলেন, অবহেলিত মানুষের পাশে রাষ্ট্রের পাশাপাশি দেশ ও সমাজের সব স্তরের ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে তাদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব। ইউএনওর এ ধরনের কাজ দৃষ্টান্তমূলক।

ইউএনও মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কিছু কাজ আছে যা নিজের বিবেকের তাড়নায় করতে হয়। সে কাজগুলো জীবনে যে প্রশান্তি এনে দেয়, তা আরও নতুন করে ভালো কিছু কাজের উৎসাহ জোগায়।