ক্লাস নিলেন ইউএনও

কলমাকান্দার ইউএনও মো. জাকির হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বরদল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ান তিনি। ছবি: প্রথম আলো
কলমাকান্দার ইউএনও মো. জাকির হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বরদল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ান তিনি। ছবি: প্রথম আলো

কাজের অংশ হিসেবে পরিদর্শনে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, নারী দিবসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন, ক্লাসও নিলেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন। বরদল উচ্চবিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি ক্লাস নিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কলমাকান্দার ইউএনও মো. জাকির হোসেন বরদল উচ্চবিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘণ্টাব্যাপী পড়িয়েছেন। এ সময় তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন।

ইউএনও মো. জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজের অংশ হিসেবে প্রতিদিন উপজেলার কোনো না কোনো ইউনিয়নে যেতে হয়। সময় সুযোগ পেলেই আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিই, আলোচনা করি। এটা আমার খুব ভালো লাগে। তা ছাড়া এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি, দেশ ও মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

বরদল উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৬২৬ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী৭১ জন। তবে আজ মঙ্গলবার তাদের মধ্যে ৪৩ জন উপস্থিত ছিল। শিক্ষক আছেন ১২ জন।

ইউএনওর ক্লাস নেওয়া প্রসঙ্গে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলে, ‘স্যারের ক্লাসে খুব আনন্দ পেয়েছি। তিনি খুব মজা করে পড়িয়েছেন। ওনার কাছ থেকে আমরা অনেক নতুন বিষয় জানলাম।’ অভিভাবক তারা মিয়া বলেন, ‘ইউএনও স্যার মাঝেমধ্যে পড়ালে আমাদের বাচ্চাদের খুব উপকার হবে। শিক্ষকদের মধ্যেও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা বাড়বে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল হেলিম বলেন, ‘ইউএনও স্যারের ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা অনেক মজা পেয়েছে। স্যার এই এক ঘণ্টা সময় তাদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। অনেক বিষয় নিয়েই তিনি আলোচনা করেছেন।’

এ ধরনের উদ্যোগে বিদ্যালয়ে জবাবদিহি বাড়বে বলে মনে করেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ রকম উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে প্রকৃত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে নিয়মশৃঙ্খলা ও জবাবদিহি বাড়বে।