ইসির নির্দেশে পূর্বধলায় ওসি প্রত্যাহার

নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বিল্লাল উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে তাঁকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিল্লাল উদ্দিন তাঁর কর্মস্থল পূর্বধলা থানার দায়িত্ব হস্তান্তর করে জেলা পুলিশ লাইনসে রিজার্ভ ইন্সপেক্টর পদে যোগদান করেছেন। অন্যদিকে ওই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমানকে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পূর্বধলায় চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের একজন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম। অন্যজন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মাছুদ আলম তালুকদার। প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর থেকে এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর, প্রচারে বাধা, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থক পাঁচজন এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদুলের অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং ওই থানার ওসি বিল্লাল উদ্দিন তাঁদের পছন্দের প্রার্থী মাছুদ আলম তালুকদারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর মধ্যে সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করে সরাসরি নির্বাচনী প্রচার চালান। এ নিয়ে জাহিদুল ইসলাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সাংসদকে ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৬-এর ২২ বিধি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিধিমালা প্রতিপালনের লক্ষ্যে সাংসদকে ভোট প্রদান ছাড়া পূর্বধলা উপজেলায় নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান এবং কোনো প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করাসহ নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর রাখতে বলা হয়। এর পর থেকে সাংসদ নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করেছেন। আর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমিশনের নির্দেশে ওসি বিল্লাল উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওসি বিল্লাল উদ্দিনকে জেলা পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে। আর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী তা করা হয়েছে।’