বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হাতছাড়া হবে অর্থাভাবে?
জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় খ (বাণিজ্য অনুষদ) ইউনিটে দ্বিতীয় এবং গ (সামাজিক বিজ্ঞান) ইউনিটে সপ্তম স্থান অর্জন করেন আলমগীর কবির। ১৪ মার্চ তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার শেষ দিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ২০ হাজার টাকা জোগাড় করতে পারেননি আলমগীর। ভর্তির টাকা সংগ্রহের জন্য তিনি এখন চরম দুশ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলতৈল গ্রামে বাড়ি আলমগীরের। বাবা দরিদ্র রিকশাচালক মুজিবুর রহমান। আলমগীর ২০১৬ ও ২০১৮ সালে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর কোনো রকম কোচিং ছাড়াই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ইউনিটে ভর্তির সুযোগও এসেছে। আলমগীর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরির মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে পারলে তাঁর সেই স্বপ্ন ব্যর্থ হয়ে যাবে।
আলমগীরের বাবা মুজিবুর রহমান ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা চালান। মা গৃহিণী। বাড়ির সামান্য জমি ছাড়া মুজিবুরের কোনো জমি নেই। ফলে অভাব-অনটনের সংসারে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করাতে চরম হিমশিম খাচ্ছেন। আর্থিক অনটনের কারণে তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় আলমগীর মাঝেমধ্যে প্রাইভেট–টিউশনি করে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার খরচ জুগিয়েছেন। কিন্তু দরিদ্র পিতা মুজিবুরের পক্ষে ছেলের ভর্তির জন্য এত টাকা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই তিনি সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আলমগীর কবির বলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছে পড়ালেখা করে বড় হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করব। ভালো চাকরি করে সংসারের অভাব দূর করব আর দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য সেবা করব। কিন্ত শুধু অর্থাভাবে আমার স্বপ্নের চূড়ান্ত পর্বে এসে আটকে গেলাম। সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিরা ভর্তির সুযোগ করে দিলে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে।’