ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি

আগুনে পুড়ে যাওয়া মান্নান স্টোরের  সংস্কারকাজ চলছে। গতকাল চকবাজারের  চুড়িহাট্টায়।  ছবি: প্রথম আলো
আগুনে পুড়ে যাওয়া মান্নান স্টোরের সংস্কারকাজ চলছে। গতকাল চকবাজারের চুড়িহাট্টায়।  ছবি: প্রথম আলো
>

• ২০ ফেব্রুয়ারি রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় আবদুল মান্নানের ‘মান্নান স্টোর’
• দোকানটির তেমন ক্ষতি হয়নি
• আবার নতুন করে গুছাচ্ছেন মান্নান

চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের পোড়া গন্ধ এখনো যায়নি। আগুনে সবকিছু ছাই হয়ে যাওয়ার চিহ্ন এখনো আছে। এ অবস্থায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন মুদি দোকানি আবদুল মান্নান। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার সাজিয়ে তুলছেন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন দোকানটি।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ছয়টি বাড়ি পুড়ে যায়। ওই ঘটনায় আবদুল মান্নানের ‘মান্নান স্টোর’ পুড়ে যায়। অবশ্য দোকানটি যে বাড়িতে সেটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন অগ্নিকাণ্ডের দুঃস্বপ্ন ভুলে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন আবদুল মান্নান।

চকবাজার থেকে নন্দকুমার দত্ত রোড, শেখ আজগর লেন, শেখ হায়দার বক্স লেন এবং ওয়াটার ওয়ার্কস রোড হয়ে চুড়িহাট্টা মোড়ে যাওয়া যায়। এর মধ্যে নন্দকুমার দত্ত রোডের ৬৪ নম্বর বাড়িটির নাম ওয়াহেদ ম্যানশন। ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। শেখ হায়দার বক্স লেন ও শেখ আজগর লেনের কোনায় মান্নান স্টোর। দোকানটি হায়দার বক্স লেনের ৯২ নম্বর বাড়িতে। ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে ওই বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৫০ ফুট।

গতকাল শুক্রবার দেখা যায়, মান্নান স্টোরের ভেতর সাজসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। তা দেখভাল করছেন আবদুল মান্নান। দোকানের বাইরের অংশে এখনো অগ্নিকাণ্ডের চিহ্ন রয়ে গেছে। বিপরীত পাশে ওয়াহেদ ম্যানশনসহ ছয়টি ভবন কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে আছে। সেগুলোতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ লেখা–সংবলিত সাইনবোর্ড ঝুলছে। চুড়িহাট্টা মোড়ের বাতাসে এখনো পোড়া গন্ধ। অনেকে নাক চেপে এলাকা পার হচ্ছেন। অনেকে দাঁড়িয়ে পোড়া বাড়িগুলো দেখছেন।

আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চুড়িহাট্টা মোড়ে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় আমি দোকানে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছি। আগুন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকান থেকে দ্রুত সরে গিয়ে রক্ষা পায় আমার দুই কর্মচারী। তবে তাদের গায়েও আগুনের তাপ লেগেছে। পরদিন সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর দেখি, দোকানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে আছে। পরে সিটি করপোরেশনের লোকজন ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেয়।’ তিনি বলেন, দোকানটিই তাঁর জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। সেটি পুড়ে যাওয়ায় পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এখন এলাকার লোকজনের দোয়া ও উৎসাহ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

নন্দকুমার দত্ত রোডের বাসিন্দা হাবিব উল্লাহ ও আক্তার হোসেন বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া এই ছয়টি ভবনের নিচে ৮০টির মতো দোকান ছিল। এর মধ্যে ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলায়ই ছিল প্রায় ৬০টি। তবে এসব দোকানে নতুন করে ব্যবসা চালু করার উপায় নেই। কারণ, ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দিয়েছে ডিএসসিসি।