সুনামগঞ্জে তিন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। দ্বীনি সিনিয়র মডেল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম। ফাঁকা ভোটকক্ষ। ষোলঘর, সুনামগঞ্জ, ১০ মার্চ। ছবি: আনিস মাহমুদ
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। দ্বীনি সিনিয়র মডেল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম। ফাঁকা ভোটকক্ষ। ষোলঘর, সুনামগঞ্জ, ১০ মার্চ। ছবি: আনিস মাহমুদ

প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লা ও ধরমপাশা উপজেলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।

কেন্দ্রগুলো হচ্ছে শাল্লা উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধরমপাশা উপজেলার দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরিষাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭৮টি উপজেলায় আজ রোববার ভোট নেওয়া হচ্ছে। সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

শাল্লা উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা। সেখানে নৌকা প্রতীকে আল আমিন চৌধুরী এবং আনারস প্রতীকে অবনীল মোহন দাস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অভিযোগ ওঠে, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নৌকার সমর্থকেরা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেন আনারস প্রতীকের সমর্থকেরা। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মুক্তাদীর হোসেন এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ব্যালট পেপার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ কারণে ভোট নেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৯৩৬। তবে স্থগিত হওয়ার আগে কত ভোট গ্রহণ হয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি কোনো তথ্য দেননি।

একই উপজেলার দামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন।

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম আহমেদ মুরাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন রোকন—এই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের বারান্দার খানিকটা সামনে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকা দুই পক্ষের এজেন্টরাও এতে জড়িয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

উপজেলার দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. যোবায়ের হাসান বলেন, সকাল আটটা থেকে এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হলে থানার দুজন পুলিশ ও আনসার ভিডিপির সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রটিতে ভোট গ্রহণ আপাতত বন্ধ রয়েছে বলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাঁকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন। ওই কেন্দ্রটিতে ভোট গ্রহণ স্বাভাবিক করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে ধরমপাশা উপজেলার সরিষাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার নিয়ে কয়েকজন ভোটারের টানাটানির ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাপস চন্দ্র রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একটি বুথে দুই-তিনজন ভোটার একে অপরের ব্যালট পেপার নিয়ে টানাটানি শুরু করেন। এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।