ছয় আপনজনের পর চলে গেলেন শাহজালালও

মারা গেছেন রাজধানীর সদরঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় আহত শাহজালাল। পরিবারের ছয় সদস্যের মৃত্যুর পর তিনিও চলে গেলেন না–ফেরার দেশে। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

স্বজনেরা রাতেই তাঁর মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের দক্ষিণ তারাবনিয়ার জাফর আলী মালকান্দি গ্রামে রওনা দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে মালকান্দির উদ্দেশে রওনা দেন শাহজালাল। সঙ্গে ছিল তাঁর স্ত্রী শাহিদা বেগম ও দুই সন্তান মিম (৮) ও মাহির (৬), আরেক চাচাতো বোন জামসেদা বেগম (২০), জামসেদার স্বামী দেলোয়ার হোসেন (২৮) ও তাঁদের সাত মাস বয়সী সন্তান জোনায়েদ। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে থাকতেন তাঁরা। শাহজালাল ও দেলোয়ার দরজির কাজ করতেন। ওই দিন রাতে সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে তাঁদের বহনকারী নৌকা ডুবে যায়। নিখোঁজ হন ছয়জন। লঞ্চের আঘাতে দুই পা বিচ্ছিন্ন হয় শাহজালালের। তাঁকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত রোববার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

দুর্ঘটনার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার হয় জামসেদা বেগমের লাশ। গত শনিবার বাদামতলী ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার হয় জামসেদার স্বামী দেলোয়ার হোসেন ও তাঁদের সাত মাস বয়সী ছেলে জোনায়েদ, শাহজালালের দুই সন্তান মিম (৮) ও মাহিরের (৬) লাশ। রোববার শাহজালালের স্ত্রী শাহিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। গতকাল রাতে মারা গেলেন শাহজালালও।

শাহজালালে শ্বশুর আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ের পরিবারের আর কেউ রইল না। আগেই মেয়ে ও দুই নাতনিকে হারালাম। আশায় ছিলাম জামাই অন্তত সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। সেও চলে গেল।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘এক গ্রামের এক পরিবারের সাতজনের মৃত্যু খুবই বেদনার। আমাদের সবার আশা ছিল অন্তত শাহজালালকে বাঁচাতে পারবেন। এখন আর এই পরিবারের কেউ রইল না।’