১১ হাজার ভোল্টের তারের নিচে ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট শ্রমিক

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তারের নিচে তৈরি হচ্ছে বাড়ি। আজ মঙ্গলবার ছিল বাড়িটির ছাদ ঢালাই। কিন্তু সে সময় রডের সঙ্গে বিদ্যুতের তার স্পর্শ হয়ে বিদ্যুতায়িত হয় রাজু (২০) ও রেজাউল (২১) নামে দুই নির্মাণ শ্রমিক। রাজুর শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পৌর শহরের উত্তর সুজাপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক সনজন দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ফুলবাড়ী উপজেলার বারাইহাট শাখার আইটি অপারেটর। তাঁর বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব রাজারামপুর মাছুয়া পাড়া গ্রামে।

গুরুতর আহত হওয়া রাজু বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে ও রেজাউল পার্বতীপুর উপজেলার আমবাড়ী বাজারের নুর ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, সনজন দাসের নির্মাণাধীন বাড়ির ওপর বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টের তার রয়েছে। সেই তার অপসারণ না করে ভবন নির্মাণ করছিলেন। দুপুরে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করার সময় রডের সঙ্গে বিদ্যুতের তার স্পর্শ হয়ে বিদ্যুতায়িত হয় রাজু ও রেজাউল।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এনায়েতুল্যা নাজিম জানান, রাজুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর রেজাউলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজুর মামা আব্দুল খালেক জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়েছেন রাজুর শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁকে এখন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ফুলবাড়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেখানে ১১ হাজার ভোল্টের তার রয়েছে। কিন্তু বাড়ির মালিক তাঁর সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা যোগাযোগ না করে নিজ দায়িত্বে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো মতামত না নিয়ে, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কীভাবে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন সে বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।

তবে ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রকৌশলী লুৎফুল হুদা চৌধুরী দাবি করেন, বাড়ির মালিক সনজন কুমার দাস নিজ দায়িত্বে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করে বাড়ি নির্মাণের অনুমতি নিয়েছে।

বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ বা বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ না করে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইনের নিচে কেন বাড়ির ছাঁদ ঢালাই করছেন এমন প্রশ্নে সনজন দাস সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে জানান।

এই বিষয়ে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসিম হাবিব এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ অভিযোগ দিলে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।