'ভোটের দিন কাউকে খাতির করা হবে না'

অলংকরণ : তুলি
অলংকরণ : তুলি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া জেলায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে প্রার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
কর্মকর্তারা বলেন, ‘আগে কী হয়েছে, ভুলে যান। ২৪ মার্চের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে। কে কোন দল করেন, তা দেখা হবে না। কোনো জরিমানা নয়, আচরণবিধি ভাঙলে সোজা জেলখানা। ভোটের দিন জিরো টলারেন্স। কাউকে খাতির করা হবে না।’

জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরিফুল হক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ছয়টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতেই জেলা প্রশাসক প্রার্থীদের বক্তব্য শোনেন। বিভিন্ন উপজেলার ১৭ জন প্রার্থী সংক্ষিপ্তভাবে কথা বলেন। তাঁরা সবাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন। অভিযোগকারী বেশির ভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। একজন নৌকার প্রার্থীও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন।

অভিযোগের ফিরিস্তি শোনার পর সদর, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, ‘ছয় উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে দৌলতপুর থেকে। এখন থেকে সাবধান হয়ে যান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো জরিমানা নয়, সোজা জেলখানা।’
এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, এলাকার মানুষ এখনো শঙ্কিত, তাঁদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তাঁরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে কি না। কেন্দ্রে কোনো গোপন বুথ থাকবে কি না। এটার নিশ্চয়তা দিতে হবে, তাহলেই মানুষ কেন্দ্রে যাবে। আরেক প্রার্থী বলেন, ‘প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে তাদের অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছি।’

পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘দৌলতপুর, মিরপুর ও ভেড়ামারার প্রার্থীরা সাবধান হয়ে যান। বেশি ঝামেলা করবেন না। বড় বড় নেতাদের বড় বড় কথা। প্রভাব খাটাবেন না। ওয়াদা করছি, আমি এসপি নির্বাচনে কোনো ঝামেলা হতে দেব না।’

এসপি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আপনাকে নৌকা দিয়েছে। সরকারপ্রধান আমাকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছেন।’
জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ‘আগে কী হয়েছে, ভুলে যান। রাষ্ট্র যদি মনে করে এটা হবে তবে সেটাই হবে। কে কোন দল করেন, সেটা দেখা হবে না। কারও পরিচয় দেখা হবে না। ২৪ মার্চের নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে।’ বিকেলে সভা শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আলাদাভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছয় উপজেলার ইউএনও ও ওসিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাঠে কঠোর থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।