নির্মাণসামগ্রীতে বন্ধ ফুটপাত-নালা

নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার কবি ফারুক সরণির ফুটপাত ও রাস্তার বিভিন্ন জায়গাজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে ইট, বালু, পাথরসহ নানা নির্মাণসামগ্রী। এতে ওই সড়কে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের মধ্যে নেমে চলতে হচ্ছে। এ কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। পাশাপাশি নির্মাণসামগ্রীর কারণে বেশ কয়েকটি স্থানে পয়োনিষ্কাশনের নালাও বন্ধ হয়ে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির পূর্ব ও পশ্চিম দুই পাশেই একাধিক ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। নির্মাণাধীন এসব ভবনের ইট, বালু, সিমেন্ট ও পাথর সরাসরি ফুটপাতে রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণসামগ্রী ফুটপাত ছাড়িয়ে এসে পড়েছে রাস্তায়।

বাসিন্দারা বলছেন, নির্মাণাধীন ভবনের মালিক-ঠিকাদারেরা এলাকাবাসীর অসুবিধার কথা বিবেচনা না করে ফুটপাত ও রাস্তায় ইট-বালু রেখে দিচ্ছেন। এতে পথচারীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তার মধ্যে নেমে পথ চলতে হয়।

ফারুক সরণির সঙ্গে যুক্ত নিকুঞ্জ-২–এর ৫ নম্বর সড়কের সংযোগস্থলে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ওই জায়গার ফুটপাতে লাল-সাদা বালু, মাটি প্রভৃতি রেখে ফুটপাত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের সামনে এসেই পথচারীদের রাস্তায় নেমে যেতে হচ্ছে। সেখানে ফেলে রাখা বালুর স্তূপ ফুটপাত ছাড়িয়ে মূল সড়কে এসে পড়েছে। এতে সড়কের প্রায় পাঁচ ফুট জায়গা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখানে পথচারীদের হাঁটতে হচ্ছিল সড়কের মধ্যে দিয়ে। ভবনটির দক্ষিণ পাশে ৫ নম্বর সড়কে টিনের বেড়া দিয়ে শ্রমিকদের জন্য অস্থায়ী শৌচাগারও তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চললেও কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী সেখানে নেই।

এর বিপরীতের বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কার্যালয়–সংলগ্ন জায়গায় আরেকটি ভবন নির্মাণ চলছে। ওই ভবনের সামনেও বড় অংশ দখল করে ফুটপাতে বালু ও পাথর রেখে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতের এক অংশে টিনের বেড়ায় তৈরি হয়েছে অস্থায়ী গোসলখানা। এতে রাস্তার ওই অংশে পুরো ফুটপাত এখন পথচারীর চলাচলের অনুপযোগী।

এ ছাড়া ফুটপাতে ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রীগুলো সরাসরি গিয়ে পানি ও পয়োনিষ্কাশনের নালায় গিয়ে পড়েছে। একাধিক জায়গায় বালু ও পথরের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পয়োনিষ্কাশনের নালা। সড়কটির আরও বেশ কয়েকটি জায়গাতে এভাবে নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। পশ্চিমে এর পরিমাণ বেশি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘নিকুঞ্জ-২ কল্যাণ সমিতি’ নামে বাসিন্দাদের একটি সংগঠন রয়েছে। তবে তাদের এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখা যায় না। এ ছাড়া আবাসিক এলাকাটিতে সিটি করপোরেশন কিংবা রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোনো অভিযান হয় না। এ সুযোগেই ইট, বালু, পাথর এভাবে রাস্তায় রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে নিকুঞ্জ-২ কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে গেলে একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছাড়া অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তা পরিদর্শক (সিকিউরিটি ইনচার্জ) মো. রতনের মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর দেননি।

আবাসিক এলাকাটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। ওয়ার্ডটির কাউন্সিলর জিন্নাত আলী বলেন, ‘আমি নিজে বিষয়টি দেখেছি এবং জনসচেতনতার উদ্দেশ্যে নিজের ফেসবুকে আইডিতে এ নিয়ে লিখেছি। এতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে, পাশাপাশি ফুটপাত ও পয়োনিষ্কাশন নালারও ক্ষতি হচ্ছে।’ তিনি বলেন, দ্রুত সংশ্লিষ্ট মালিক ও ঠিকাদারদের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে। সে মোতাবেক কাজ না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।