ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় তিনজনের যাবজ্জীবন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন।

রবিউল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি।

দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকার সেতু ইসলাম, বাবলা ও সোহাগ। এ মামলায় রাজন, সুরুজ, কাজল, শাকিব, সাঈদ, রেজাউল ও নিটুল নামের সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সেতু ছাড়া সবাই আদালতে হাজির ছিলেন।

বাদী ও আসামি পক্ষ এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা মাঠে রবিউলের ওপর রড, পেপসির বোতলসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে তাঁকে আহত করেন দুর্বৃত্তরা। রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনার পরের দিন ১৫ এপ্রিল নিহত ছাত্রলীগ নেতার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের মেহেরচন্ডী এলাকার সেতু, বাবু, বাবলা, সোহাগ, সাঈদ, রেজাউল, নিটুল, রাজন, সুমন, জামিল, কোয়েল, সুরুজ, মিঠুসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়।

তিন দফায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর ২০১৪ সালের ৫ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর শরীফ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে বাদী আদালতে নারাজি দিলে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেন। এখানেও কয়েক দফা তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রাশেদুল ইসলাম আদালতে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ২০১৮ সালে মামলাটি রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। শুনানি শেষে আজ বিচারক এই রায় দেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই রায়ে ন্যায়বিচার পাইনি। আসামিদের ফাঁসির রায় প্রত্যাশা করেছিলাম।’ উচ্চ আদালতে গিয়ে ন্যায়বিচার পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।

আসামি পক্ষের একজন আইনজীবী বলেন, তাঁরাও উচ্চ আদালতে যাবেন। সেখানে দণ্ড পাওয়া আসামিরা অব্যাহতি পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।