খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চাননি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চাননি। কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে এই তথ্য জানিয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ তালুকদার বলছেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, যা সবাই জানেন। এ জন্য হয়তো আদালতে আসেননি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করলে আগামী ৯ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এ আজ বুধবার এ মামলার শুনানি হয়।

শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতে বলেন, ‘আমরা মামলার অনেক কাগজপত্র হাতে পাইনি। কাগজপত্র ছাড়া কীভাবে শুনানি করব?’ মাসুদ তালুকদারের এ কথার পর আদালত কাগজপত্রের জন্য দরখাস্ত দিতে বলেন।

মামলার অপর আসামি বিএনপি নেতা আমিনুল হক আদালতে হাজির হননি। তাঁর আইনজীবী আদালতকে জানান, আমিনুল হক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এখন সিঙ্গাপুরে আছেন। মামলার আসামি বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী আদালতে হাজির ছিলেন। অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশও হাতে এসেছে।

আদালতের বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে এজলাস ত্যাগ করেন। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেন। সেদিনই খালেদা জিয়াকে হাজির করার পরোয়ানা জারি করা হয়। দুর্নীতির পৃথক দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হয়েছে। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি এখানে অবস্থান করছেন। আদালত সূত্র বলছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলার আসামি বিএনপি নেতা আমিনুল হকের আবেদন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলাটি এখন অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে আছে।

নথি থেকে জানা যায়, মামলার ১৬ আসামির মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ও মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আর সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান, বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলাম মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াসহ নয়জন এখন মামলার আসামি।

২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ২৫ মে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দুদক মামলাটি করে।