হেলে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি নিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

গত বছর ঝড়ে হেলে যাওয়া বৈদ্যুতিক খুঁটি। গত শুক্রবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কাফুড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
গত বছর ঝড়ে হেলে যাওয়া বৈদ্যুতিক খুঁটি। গত শুক্রবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কাফুড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কাফুড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে সড়কের পাশে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি প্রায় এক বছর আগে ঝড়ে হেলে পড়ে। কিন্তু এত দিনেও সেই খুঁটি সোজা করা হয়নি। খুঁটিতে রয়েছে ১১ কেভি ও ৪৪০ ভোল্টের চালু সঞ্চালন লাইন। তার ছিঁড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকার বাসিন্দারা।

একই রকম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে শেরপুর পৌর শহরের দত্তপাড়া ও ঘোলাগাড়ী সড়কের আরও দুটি সঞ্চালন লাইনের খুঁটি।
ঝুঁকিপূর্ণ এসব খুঁটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) স্থাপন করা। এই দপ্তরের স্থানীয় বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সঞ্চালন লাইন। স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে এই সঞ্চালন লাইনের দেখভাল করা হয়। তবে এটি এখন নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী নূরুল আলম বলেন, তাঁর ‘বারোদুয়ারিপাড়া’ বৈদ্যুতিক ফিডারের আওতায় রয়েছে ১৩ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সরবরাহের খুঁটিসহ সঞ্চালন লাইন। তাঁর পুরো এলাকায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটি রয়েছে অন্তত ২৫টি।

একই দপ্তরের কার্যালয় সহকারী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, শেরপুরে তাঁদের দপ্তরের আওতায় রয়েছে বারোদুয়ারি, হাসপাতাল, সাধুবাড়ী, মহিপুর ও মির্জাপুর নামের ফিডার। এসব ফিডারের আওতায় সঞ্চালন লাইনে অন্তত ১০০টি ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটি আছে। ঝুঁকিপূর্ণ সব খুঁটি মেরামত করতে তালিকা প্রস্তুত করে তাঁদের বিভাগীয় প্রজেক্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে খুঁটি মেরামতের কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।
সঞ্চালন লাইনের খুঁটিগুলো স্টিলের ও সিমেন্টের ঢালাই করা। সড়কের পাশে বসানো খুঁটির ওপর রয়েছে ১১ কেভি ভোল্টের সঞ্চালন লাইন। এসব খুঁটির মধ্যে ৪৪০ ভোল্টের লাইনগুলো চলে গেছে মূল সড়ক থেকে গ্রাম ও শেরপুর পৌর শহরের বিভিন্ন মহল্লার ভেতর।

কাফুড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. বাবলু মিয়া বলেন, গত বছর ঝড়ে তাঁর বাড়ির সামনে ১১ কেভি ও ৪৪০ ভোল্টের সঞ্চালন খুঁটিটি গোঁড়া থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে সরে হেলে পড়ে। হেলে পড়া খুঁটিটি সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিস থেকে একাধিকবার দেখে গেছে। কিন্তু এখনো মেরামত করা হয়নি। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, আবার ঝড় হলে তার ছিঁড়ে যেতে পারে।
উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী সড়কের পাশে টানানো রয়েছে বিপিডিবি ১১ কেভি ভোল্টের সঞ্চালন লাইন। এই লাইনে গ্রামের প্রবেশমুখে একটি খুঁটি ঝড়ে এক বছর আগে পূর্ব দিকে হেলে যায়। গ্রামের দুজন বাসিন্দা বলেন, খুঁটির ওপর যে লাইন টানা রয়েছে, তা টান টান হয়ে আছে।

বিপিডিবির শেরপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদুল হাসান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিসহ সঞ্চালন লাইন মেরামত এখন তাঁর দপ্তরের অধীনে নেই। এই কার্যালয়টি নেসকো কোম্পানির অধীনে চলে যাওয়ার পর তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেরামতকাজ প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। ইতিমধ্যে শেরপুরের ঝুঁকিপূর্ণ সঞ্চালন লাইন মেরামতের জন্য তাঁরা প্রকল্প কর্মকর্তার দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটি দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।