তিন নারীকে সম্মাননা জানাল জাতিসংঘের তিন সংস্থা

সম্মাননা পাওয়া তিন নারীর সঙ্গে আইএলও, ইউএনএফপিএ ও ইউএন উইমেনের এ দেশীয় প্রধানেরা। ছবি: প্রথম আলো
সম্মাননা পাওয়া তিন নারীর সঙ্গে আইএলও, ইউএনএফপিএ ও ইউএন উইমেনের এ দেশীয় প্রধানেরা। ছবি: প্রথম আলো

নারী দিবস উপলক্ষে তিন নারীকে সম্মাননা জানাল বাংলাদেশে জাতিসংঘের তিন সংস্থা। এই তিন নারী সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবিলা করে সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জাতিসংঘের তিন সংস্থা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউএন উইমেন ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) নারী দিবস উপলক্ষে এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই তিন সংস্থার এ দেশীয় প্রধানরা পুষ্প খাতুন (১৯), পারভীন আক্তার (৩৩) ও নাসিমা আক্তারের (৩৭) হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

বগুড়ার মেয়ে পুষ্প খাতুন ইউএনএফপিএর সদস্য নারী নির্যাতন প্রতিরক্ষা কমিটির সদস্য। তিনি এ পর্যন্ত ১৩টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন এবং পারিবারিক নির্যাতনের শিকার আট নারীকে সহায়তা প্রদান করেছেন। পুষ্প বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুদের দেখেছি যারা বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিজেদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করেছে। আমি তাদের একজন হতে চাইনি এবং আমিও অন্যদের সঙ্গে এমনটা হোক তাও চাই না। কোনো মেয়েই বাল্যবিবাহের শিকার যেন না হয় এবং কোনো নারী যেন সহিংসতার শিকার না হয়।’

অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা বা থেকে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান, ইউএন উইমেনের এ দেশীয় প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া, মোহাম্মাদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা রুবানা হক, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম, আইএলও’র এ দেশীয় পরিচালক তুমো পুতিয়েনাইন, অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান, শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, ইউএনএফপিএ’র প্রতিনিধি আশা টরকেলশন। ছবি: প্রথম আলো
অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা বা থেকে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান, ইউএন উইমেনের এ দেশীয় প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া, মোহাম্মাদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা রুবানা হক, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম, আইএলও’র এ দেশীয় পরিচালক তুমো পুতিয়েনাইন, অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান, শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, ইউএনএফপিএ’র প্রতিনিধি আশা টরকেলশন। ছবি: প্রথম আলো

অল্প বয়সেই বিয়ে পারভীন আক্তারের। তিনি জাতিসংঘ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। একটি ছোট টেক্সটাইল কারখানার মালিক পারভীন দরিদ্র নারীদের নিয়োগ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁর কারখানাতে শিশু যত্নের সুবিধা চালু করেছেন। এ ছাড়া কর্মীদের যৌন হয়রানি প্রশিক্ষণও প্রদান করেছেন।

নাসিমা আক্তার প্রবাসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। দেশে ফিরে ইলেকট্রনিকসে বৃত্তিমূলক কোর্স করে আন্তর্জাতিক একটি সংস্থায় টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করছেন।
আইএলও এর বাংলাদেশের পরিচালক তুমো পুতিয়েনাইন বলেন, মানসম্মত শিক্ষা পেতে এবং উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে নারীর একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। আইএলও বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে সকল বয়সের নারীদের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ এবং চাকরির পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করছে।

জাতিসংঘের নারী প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া বলেন, এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে নারীরা উদ্যোক্তা হবে এবং নারী-বান্ধব সরকারি পরিষেবাগুলোয় কাজ করতে পারবে। যেখানে ডে-কেয়ার সেন্টারও থাকবে।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউএনএফপিএর প্রতিনিধি আশা টরকেলসন, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক প্রমুখ।