নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো

শহরে গ্রাহক পর্যায় যখন এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ নয় টাকা, তখন গ্রামে সোলার বিদ্যুতের এক ইউনিটের পেছনে খরচ হয় ৩০ টাকা! অথচ সারা বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে, এই দৌড়ে কোথায় আছে বাংলাদেশ? নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়ে একটি নীতিমালারও প্রয়োজন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ ও ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সোসাইটির আয়োজনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন 'উন্নয়নের জন্য শক্তি' তে এ কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্র্যাক সিডিএমে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এখানে বাংলাদেশের জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা এবং সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চীনের স্টেট গ্রিড করপোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়ু জুন। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় এক বিলিয়ন মানুষের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এই বিদ্যুতের সিংহভাগই আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে।

চীনের মতো বাংলাদেশেও কি পারে এভাবে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে? এ প্রশ্নের জবাবে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট সাইফুর রহমান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা বিদ্যুৎ পাওয়ার তিনটি উপায় আছে। এগুলো হলো সূর্য, বায়ু এবং পানি। পানির বিষয়টায় বাংলাদেশ আগেই পিছিয়ে আছে। কারণ যেমন পাহাড়ি নদীর দরকার তা এ দেশে হওয়া অসুবিধা। জরিপ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ সমুদ্রতটের বাতাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়। তবে ভূমিতে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা নিয়ে এখনো গবেষণার সুযোগ আছে বলে জানান তিনি।

সাইফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের একমাত্র যে পথটা অবারিত রয়েছে তা হচ্ছে সূর্য। অস্ট্রেলিয়া বা চীনে সোলার বসানো বাংলাদেশের চেয়ে সুবিধাজনক। কারণ তাদের প্রচুর অনাবাদি জমি রয়েছে। কিন্তু এ দেশে এর অভাব রয়েছে। তবে বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসানো সম্ভব। বহুবার সোলার প্যানেল নিয়ে কাজ করা হয়েছে তারপরেও সোলার এখনো জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হতে পারেনি। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশে বাসাবাড়িতে সোলার থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

সাইফুর রহমান আরও বলেন, সৌর কোষগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ অসুবিধাজনক এতে যে দক্ষতা লাগে তা সবার মধ্যে নেই। আবার উৎপন্ন বিদ্যুৎ কী উপায়ে কত টাকা দিয়ে বিক্রি হবে সে বিষয়েও নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল এ বিষয়ে সাফল্য পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।