ধর্ষণের ঘটনার মূল হোতাকে বিয়ে

দিনাজপুরের বিরামপুরে গণধর্ষণের মামলার আসামি শাহিন আলমকে নিজের স্বামী দাবি করেছেন ঘটনার শিকার এক তরুণী। গত বুধবার আদালতে শুনানি চলাকালে পুলিশের রিমান্ডের আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চান ওই তরুণী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোহেল রানা বলেন, শাহিন আলম ওই তরুণীকে গণধর্ষণ ঘটনার ‘মূল হোতা’। তাঁর (শাহিন) বাড়ি উপজেলার বেনিপুর গ্রামে। ৭ মার্চ পুলিশ তাঁকে পাশের নবাবগঞ্জ উপজেলার তাঁর এক বন্ধুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের বিচারক শাহিনকে জেলা কারাগারে পাঠান।

পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, শাহীন আলমকে ৭ মার্চ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত বুধবার দিনাজপুর আমলি আদালত-৬–এর জ্যেষ্ঠ বিচারক শিশির কুমার বসুর আদালতে রিমান্ড শুনানির দিন ওই তরুণী আদালতকে জানান, ৩ মার্চ শাহিনকে বিয়ে করেছেন তিনি। তিনি বিচারকের কাছে শাহিনের রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক শাহিনের রিমান্ড ও জামিন দুটোই নামঞ্জুর করেছেন।

গতকাল শুক্রবার ওই তরুণী প্রথম আলোর কাছে শাহিনকে বিয়ে করার কথা স্বীকার করে জানান, তিনি এখন শ্বশুরবাড়িতে আছেন।

তরুণীটি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, শাহিন আলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। গত ১৮ জানুয়ারি ঘটনার সময় তিনি শাহিন আলমের সঙ্গে ছিলেন। হঠাৎ চারজন অপরিচিত ব্যক্তি ওই তরুণীকে শাহিনের কাছ থেকে নিয়ে অন্যত্র ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় শাহিন আলম জড়িত নন। শাহিন আলমের নামে মামলা করলেন কেন, এমন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি ওই তরুণী। তবে তিনি জানান, ঘটনার পর শাহিন আলম তাঁকে জানিয়েছেন যে ওই চার ব্যক্তি তাঁকে নিয়ে যাওয়ার পর শাহিন খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে পাননি। মামলার পর থেকে শাহিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা বিয়ে করেছেন।

তবে শাহিনকে গ্রেপ্তারের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেছিলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শাহিন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন। এ ছাড়া মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে পুলিশ শাহিনসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার তিন আসামিই পুলিশের কাছে তরুণী ধর্ষণের সঙ্গে পাঁচজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাটলায় ওই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। পরদিন শনিবার বিরামপুর থানায় ওই তরুণী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে হেঁটে নানির বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত পাঁচজন তাঁকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। রাতে জ্ঞান ফেরার পর দেখেন তাঁর হাত বাঁধা। পরে তিনি কোনোরকমে হাতের বাঁধন খুলে নানার বাড়িতে যান। পরদিন তিনি পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।