আয়মনকে ফেরত পাঠাল পুলিশ

ফরিদপুরের নগরকান্দার মনোহরপুর এলাকায় গতকাল নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান আয়মন আকবর চৌধুরী। পরে তিনি ঢাকায় ফিরে যান।  ছবি: প্রথম আলো
ফরিদপুরের নগরকান্দার মনোহরপুর এলাকায় গতকাল নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান আয়মন আকবর চৌধুরী। পরে তিনি ঢাকায় ফিরে যান। ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের নগরকান্দায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইলেন সাংসদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বড় ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী। গত শুক্রবার বিকেল থেকে গতকাল শনিবার বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত তিনি নগরকান্দায় ছিলেন। পরে পুলিশ তাঁকে বুঝিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়।

দ্বিতীয় পর্বে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ জেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে আগামীকাল সোমবার। নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীকে বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীকে সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাব আকবর সমর্থন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অনেকটাই দ্বিধাবিভক্ত। এ প্রেক্ষাপটে সাজেদা চৌধুরীর বড় ছেলে আয়মন নৌকার পক্ষে ভোট চাইলেন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আয়মন আকবর ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসে নগরকান্দার তালমার মোড় এলাকায় এসে পৌঁছান। এ সময় হাজারো সমর্থক তাঁকে স্বাগত জানান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান সরদারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে সমবেত জনতার উদ্দেশে আয়মন বলেন ‘নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর মার্কা। আজ শেখ হাসিনা নৌকার কান্ডারি। তিনি যাঁকে নৌকা দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে সব ভেদাভেদ ভুলে কাজ করে যেতে হবে।’

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আয়মনের নেতৃত্বে একটি মিছিল তালমার মোড় থেকে শুরু হয়ে তালমা-চাঁদহাট সড়ক ধরে নগরকান্দা দিয়ে যায়। মনোহরপুর এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই সময় পুলিশের সঙ্গে আয়মন আকবরের বেশ কয়েকবার বাদানুবাদ হয়। পুলিশ তাঁকে ঢাকা ও ফরিদপুর শহরে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু আয়মন আকবর তাতে রাজি হননি। সেখানে সড়কের ওপরে গাড়িতে প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থাকেন তিনি। রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মনোহরপুর এলাকার শহীদ চৌধুরীর বাড়িতে আশ্রয় নেন। রাতে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রাখে।

গতকাল সকালে ওই বাড়িতে যান নগরকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বদরুদ্দোজা শুভ, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি, নগরকান্দা সার্কেল) এ বি এম মহিউদ্দিন, নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পর আয়মন আকবর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। তাঁকে বহনকারী মাইক্রোবাসের সামনে ও পেছনে পুলিশের দুটি গাড়ি পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।

আয়মন আকবর প্রথম আলোকে বলেন, এ এলাকায় নৌকার দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনা ও সাজেদা চৌধুরীর মনোনীত প্রার্থীদের হারানোর নানা চক্রান্ত চলছে। এসব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে সব ভেদাভেদ ভুলে নেতা-কর্মীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও পুলিশ তাঁকে শুক্রবার রাতেই এলাকা ত্যাগের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিনি তাঁর কথা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পৌঁছে দিয়েছেন। এখানেই তাঁর সার্থকতা।

এএসপি এ বি এম মহিউদ্দিন বলেন, সংসদ উপনেতার ছোট ছেলে এলাকায় অবস্থান করে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এ অবস্থায় বড় ছেলে এলাকায় অবস্থান করলে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়গুলো বুঝিয়ে আয়মন আকবরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।