বর্ণিল চিত্রে সাজবে দুই পাশের দেয়াল

তেজগাঁও রেলক্রসিং থেকে সাত রাস্তা মোড় পর্যন্ত মেয়র আনিসুল হক সড়কের দুই পাশের দেয়াল হাতে আঁকা বর্ণিল চিত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

ডিএনসিসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে নেওয়া বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন মেয়র। একই সঙ্গে এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে মেয়রের হ্যাশট্যাগ লাভ ঢাকার প্রচারণাও শুরু হবে।

ডিএনসিসি বলছে, আজ সকাল ১০টা থেকে হাতে আঁকা ছবিতে সড়কটির দুই পাশের দেয়াল সাজিয়ে তোলার কাজে অংশ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ১৮০ জন শিক্ষার্থী। উপস্থিত থাকবেন ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–শিক্ষার্থী, এলাকার বাসিন্দা, প্রতিবন্ধী শিশু, রাজনৈতিক নেতা–কর্মী, বিভিন্ন শ্রমজীবী–সামাজিক–ব্যবসায়িক ও পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানেরও এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা আছে।

এই উদ্যোগ সম্পর্কে মেয়র আতিকুল ইসলাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা পরিচ্ছন্ন ঢাকা বিনির্মাণে সামাজিক সচেতনতা তৈরির একটা প্রয়াস। আমি বরাবরই বলে আসছি, কেবল একজন মেয়র কিংবা সিটি করপোরেশনের পক্ষে এককভাবে ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়। এই শহর সবার। শহরটিকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে সবাইকে সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা যদি এই শহরকে মন থেকে ভালোবাসতে না পারি, তাহলে এর যত উন্নয়নই হোক, তা ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই হ্যাশট্যাগ লাভ ঢাকা প্রচারণার মাধ্যমে আমি নগরবাসীকে যে বার্তাটি দিতে চাই, তা হচ্ছে আপনারা প্রত্যেকে এই শহরকে ভালোবাসুন। কেবল আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারবে এই শহরকে রক্ষা করতে।’

প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে সম্মান জানাতে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনের ২১তম বোর্ড সভায় সাত রাস্তার মোড় থেকে তেজগাঁও রেলক্রসিং পর্যন্ত সড়কটি তাঁর নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়। আগে এই সড়কটিতে গড়ে উঠেছিল ট্রাকস্ট্যান্ড। বহু বছর ধরে প্রশাসন এই রাস্তা উদ্ধার করতে পারেনি। মেয়র আনিসুল হক সেই রাস্তা নগরবাসীর ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সড়কটি দখলমুক্ত করতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকদের প্রচণ্ড ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। উদ্ধারের পর সংস্কার করে তিনি রাস্তাটির চেহারা বদলে দেন।

প্রায় ১০০ ফুট চওড়া এই সড়ক ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকাকে তেজগাঁও, মহাখালী এবং বনানী-গুলশান-নিকেতনের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ফার্মগেট ও তেজগাঁও এলাকার অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট এবং কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রধান কার্যালয়সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও সাধারণ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন।

গতকাল দুপুরে সড়কটিতে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালে ছবি আঁকার জন্য দুই পাশের সবগুলো দেয়াল পরিষ্কার করা হয়েছে। চড়ানো হয়েছে সাদা রং। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দেয়াল দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল)।