সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র

শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনকেন্দ্রে শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বিনোদনকেন্দ্র। গতকাল বিকেলে।  সংগৃহীত
শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনকেন্দ্রে শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বিনোদনকেন্দ্র। গতকাল বিকেলে। সংগৃহীত

তাদের কারও মা-বা নেই। কেউ বা পথশিশু কিংবা বাল্যবিবাহের শিকার। আছে নির্যাতিতরাও। তারা সবাই শিশু। এ রকম ১৯৮ শিশুর ‘ঘর’ হয়েছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনকেন্দ্রে।

কেন্দ্রে এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য খেলাধুলার কিছু ব্যবস্থা আছে। তবে তা যৎসামান্য। তাই তাদের অবসরের সময়টা আরও আনন্দমুখর করে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ রুহুল আমিন। তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ছোট্ট বিনোদনকেন্দ্র। আজ রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উদ্বোধন করা হবে এটি।

কেন্দ্রের শিশুদের বসবাসের দুইটি ডরমিটরির মাঝখানের ছোট্ট জায়গার ওপর এ বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এতে আছে ছয় জোড়া দোলনা, স্লিপার আর সি-সো রাইড। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় এ বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ। গতকাল শেষ হয়েছে কাজ। গতকাল শনিবার বিকেলে শিশুদের জন্য প্রাথমিকভাবে এ বিনোদনকেন্দ্র উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। এসব রাইড উপভোগ করতে পেরে আনন্দে মেতে উঠে শিশুরা।

দোলনায় চড়তে চড়তে অনুভূতি জানাচ্ছিল সায়মা আক্তার নামের এক খুদে শিশু। সে বলে, জীবনে প্রথমবারের মতো দোলনায় চড়ল সে। অন্যরকম অনুভূতি। প্রতিদিন এভাবে দোলনা, স্লিপার আর সি-সোতে চড়তে পারবে ভেবে খুব ভালো লাগছে। তানজিলা আক্তার ও সাবিতা আক্তার নামের অন্য দুই শিশু বলে, এখন থেকে প্রতিদিনের বিকেলটা তাদের আনন্দে কেটে যাবে।

সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের বিকেলটা যাতে সুন্দর কাটে সে জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান ইউএনও মোহাম্মাদ রুহুল আমিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অসহায় এসব শিশু যাতে বিষণ্ন না থাকে এবং তাদের মানসিক বিকাশ যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য এই বিনোদনকেন্দ্র।

তিনি বলেন, এই বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তুলতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়ন ছাড়াও কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষীও এতে সহায়তা করেছেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ১৩টি শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনকেন্দ্রের মধ্যে এই কেন্দ্র একটি।

হাটহাজারীর ফরহাদাবাদে অবস্থিত এ কেন্দ্রের মাধ্যমে হারানো, নির্যাতিত, আইনের সংস্পর্শে আসা, শ্রমজীবী, বাল্যবিবাহের শিকার ও এতিম শিশুদের আশ্রয়সহ বিভিন্ন সেবা দেওয়া হয়।