ইচ্ছা অনুযায়ী সামাদকে নিউজিল্যান্ডে দাফন করা হবে

আবদুস সামাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবদুস সামাদ। ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহত কুড়িগ্রামের সন্তান আবদুস সামাদকে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডে দাফন করা হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন নিহত সামাদের বড় ছেলে তোহা মোহাম্মদ ও ছোট ভাই আবদুল কাদের।

ঢাকায় বসবাসরত তোহা মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত শনিবার বিকেলে আমার মা ও ছোট ভাই নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে বাবার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। বাবার লাশ শনাক্ত হয়েছে। সোমবার সকালে তারা লাশ হস্তান্তর করবে বলে আমার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে। লাশ পাওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির কবরস্থানেই বাবাকে দাফন করা হবে। আমার মা ও ভাইয়েরা সেখানকার ফরমালিটিগুলো সম্পন্ন করছে।’ তবে তিনি অচিরেই ভিসা সম্পন্ন করে নিজেও নিউজিল্যান্ডে মা ও ভাইদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন বলে জানান।

ঢাকায় একটি মানবাধিকার সংস্থায় কর্মরত সামাদের ছোট ভাই কাদের বলেন, ‘বড় ভাই, ভাবিকে বলে রেখেছিল, যেহেতু আমি এ মসজিদটি তৈরি ও দীর্ঘ সময় নামাজ পড়িয়েছি, আমাকে এখানেই দাফন করবে। সে কারণে পরিবারের সম্মতি ও তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।’

উল্লেখ্য, সামাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মধুরহাইল্লা¬গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। ১০ ভাইবোনের মধ্যে সামাদ সবার বড়। কয়েক বছর ধরে দুই ছেলে তারেক মোহাম্মদ ও তানভির মোহাম্মদ এবং স্ত্রী কিশোয়ারা সুলতানাকে নিয়ে তিনি নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপনা ছেড়ে তিনি ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড যান এবং সেখানে লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর থেকে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে স্ত্রী, দুই ছেলেসহ নিউজিল্যান্ডেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলের। এরই মধ্যে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় সন্ত্রাসীর গুলিতে তিনি নিহত হন।

রোববার নাগেশ্বরী উপজেলার মধুরহাইল্লা¬গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, খবর পেয়ে অনেকেই তাঁর খোঁজখবর নিতে আসছেন। সেখানে কথা হয় তাঁর ভাতিজা আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর চাচা দুই বছর আগে বাড়িতে এসেছিলেন। ওই সময় তিনি ছেলে তারেক মোহাম্মদের জন্য মেয়ে পছন্দ করে যান। বিয়ের আলাপও চূড়ান্ত প্রায়। আগামী এপ্রিল মাসে এসে ছেলের বিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। তা আর হলো না।