কুতুবখালী খালে আবার আগের অবস্থা

পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর পর মাস না পেরুতেই বর্জ্য ভরে গেছে কুতুবখালী খাল। গতকাল বিকেলের ছবি।  প্রথম আলো
পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর পর মাস না পেরুতেই বর্জ্য ভরে গেছে কুতুবখালী খাল। গতকাল বিকেলের ছবি। প্রথম আলো

দীর্ঘদিন ধরে বর্জ্যে ঠাসা কুতুবখালী খালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার পর মাস না যেতেই আবার আগের অবস্থা ফিরেছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, আশপাশের লোকজনের মধ্যে খালে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা বন্ধ না হওয়ার কারণে এই খালটি পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

গত ২১ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন খালটির পরিচ্ছন্নকরণ অভিযানের উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনের পর এক মাসের মধ্যেই প্রায় ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই খালটি বর্জ্যমুক্ত করা হয়। তবে বর্জ্য অপসারণের পর মাস পার হতে না-হতেই আবারও খালটির বিভিন্ন অংশে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, দোলাইরপাড় বাইতুশ শরফ জামে মসজিদের সামনে থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে কুতুবখালী পর্যন্ত খালটিতে বর্জ্য ফেলে অপরিচ্ছন্ন করে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব দোলাইরপাড় বাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত বেশি বর্জ্য ফেলা হয়েছে। আর বাইতুশ শরফ জামে মসজিদ থেকে পূর্ব দোলাইরপাড় বাজারের দিকে কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পরও খালের মধ্যে বর্জ্য ফেলে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় এমদাদুল হক বলেন, আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ কেউ গভীর রাতে বাসাবাড়ির ময়লা খালে ফেলছেন। খালের পাশের বাসিন্দারা সচেতন না হলে এই খাল পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হবে না। তবে আরিফ রহমান নামের আরেক বাসিন্দার ভাষ্য, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যথাযথ ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। খালটি পরিষ্কার করার পর এর পাশে অস্থায়ী ডাস্টবিন তৈরি করা হলে খালের মধ্যে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমে যেত।

এদিকে খাল পরিচ্ছন্নকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে সাঈদ খোকন বলেছিলেন, ‘আমরা যখন খাল পরিষ্কার করে যাই, এর দু-তিন সপ্তাহ যেতে না-যেতে সেই খাল আবার ময়লা-আবর্জনায় ভরে যায়। বড় বিষয়টি হচ্ছে, আমরা বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা এই খালে ফেলি। আমরা একটা সুন্দর ও বাসযোগ্য ঢাকা আগামী প্রজন্মের মধ্যে তুলে দিতে চাই।’ এ জন্য এলাকাবাসীকে খালে বর্জ্য না ফেলতে অনুরোধ জানান তিনি।

ডিএসসিসি সূত্র বলছে, খাল পরিচ্ছন্নকরণ শেষে ফের যাতে ময়লা ফেলা না হয়, তাই খালের দুই পাশে পাকা ডাস্টবিন করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। যেহেতু কুতুবখালী খালের বেশির ভাগ অংশ দনিয়া ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে, যা নতুন করে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফেরাতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খালের মধ্য ময়লা যাতে ফেলতে না হয়, সে জন্য এর দুই পাশে ৫টি করে ১০টি ডাস্টবিন তৈরি করার কাজ শিগগিরই শুরু হবে। পরে ডাস্টবিন থেকে ময়লা সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আসা হবে।

ডিএসসিসির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই এলাকা নতুন যুক্ত হওয়া ইউনিয়নের মধ্যে থাকার কারণে সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করতে পারিনি। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করার জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। তা অনুমোদন হয়ে এলে আরও বড় পরিসরে কাজ শুরু করা হবে।’