শ্রীপুরে মেয়েদের ক্রিকেট উৎসব

চলছে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা। গতকাল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় শিশুপল্লী  প্লাসে।  ছবি: প্রথম আলো
চলছে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা। গতকাল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় শিশুপল্লী প্লাসে। ছবি: প্রথম আলো

খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর মাধ্যমে নারীদের এগিয়ে আনার প্রয়াস নিয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শিশুপল্লি প্লাস নামের একটি নারী ও শিশু পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান। উপজেলার ছাত্রীদের নিয়ে ‌‘শ্রীপুর গার্লস ক্রিকেট প্রোগ্রাম’ নামের একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করছে তারা। এর উদ্দেশ্যে উপজেলা থেকে নারী ক্রিকেটার তৈরি করা, যারা ভবিষ্যতে জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখবে।

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শুরু হয় এই উদ্যোগ। শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ছয়টি স্কুল এতে অংশ নিচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো শিশুপল্লি প্লাস স্কুল, আনসার টেপিরবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়, টেপিরবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়, আলহাজ নওয়াব আলী উচ্চবিদ্যালয়, তেলিহাটি উচ্চবিদ্যালয় ও কবি নজরুল আইডিয়াল স্কুল।
গতকাল মঙ্গলবার শিশুপল্লি প্লাসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার খেলার মাঠে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি উচ্চবিদ্যালয় ও আনসার উচ্চবিদ্যালয়ের মেয়েরা। প্রাচীরঘেরা প্রতিষ্ঠানের বিশাল মাঠের পাশে স্কুলগুলোর
সহপাঠীরা খেলা উপভোগ করছে। একই সঙ্গে খেলা দেখছে শিশুপল্লি প্লাসে থাকা শিশু–কিশোর ও তাদের মায়েরা। খেলায় জয়ী হয় টেপিরবাড়ি আনসার উচ্চবিদ্যালয়।

পুরো আয়োজনে কোচের দায়িত্বে আছেন শিশুপল্লি প্লাস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীদের প্রথম বিভাগে ক্রিকেটে অংশ নেওয়া মনিকা আক্তার।
শিশুপল্লি প্লাসের সমন্বয়ক (শিক্ষা) মো. রিয়াজ বলেন, এই প্রতিযোগিতা শেষে শ্রীপুর থেকে মেয়েদের একটি ক্রিকেট দল তৈরি করা হবে। তাদের আরও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে খেলার জন্য যোগ্য করে তোলা হবে। তিনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন নারী ক্রিকেটার প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে। তারা হলো ইসমত আরা, চুমকি, নাদিরা, হালিমা ও নিপা। তারা আগে কেবল শিশুপল্লির শিশুদের ক্রিকেট খেলায় প্রশিক্ষণ দিত। কিন্তু এখন আশপাশের স্কুলগুলোকেও সংযুক্ত করছে। পরবর্তী সময়ে পুরো উপজেলার সব স্কুল নিয়ে এ কার্যক্রমকে আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে।
কবি নজরুল আইডিয়াল স্কুল দলের ক্রিকেটার জেরিন আক্তার বলে, ‘আমাদের দেশের নারী ক্রিকেটে ভালো করছে। আমরাও ভালো ক্রিকেট খেলতে জানি। একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি। সব কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান পারদর্শী হতে পারে, তা দেখিয়ে দিতে চাই আমরা।’

শিশুপল্লি প্লাসের কর্মকর্তা আসলাম হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে অনেক স্কুল তাদের মেয়েদের খেলাধুলা করতে দিতে চায়নি। পরে তাদের পরিবারকে বোঝালে তারা রাজি হয়। মেয়েদের খেলাধুলায় খুব আগ্রহ। তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের এই উদ্যোগ মেয়েদের ভেতরে ক্রিকেট সত্তা জাগাবে। ক্রমান্বয়ে এই উদ্যোগ পুরো উপজেলায় নেওয়া হবে।’
এই আয়োজনে আর্থিক সহযোগিতা করছে এইচএসবিসি।