পাঠদান বন্ধ করে ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরাণী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দিতে শোভাযাত্রা নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয় যাচ্ছে।  ছবি: প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরাণী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দিতে শোভাযাত্রা নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয় যাচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরাণী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে আমগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত সোমবার উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে জেলার হরিপুর উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবদুল কাইয়ুম জয়লাভ করেন। তিনি হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হাতে ফুল নিয়ে বিদ্যালয় চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রা যাদুরাণী হাটের আশপাশের এলাকা ঘুরে আমগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এরপর তারা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুমের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলে, ‘বিদ্যালয়ে আসার পর প্রধান শিক্ষক ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা বলে শোভাযাত্রায় থাকতে নির্দেশ দেন। এরপর প্রচণ্ড রোদের মধ্যে হেঁটে হেঁটে আশপাশের এলাকায় শোভাযত্রা করে আওয়ামী লীগ অফিসে গিয়ে তাঁকে (ভাইস চেয়ারম্যান) সংবর্ধনা দিই। এ কারণে আমাদের স্কুলে ক্লাস হয়নি।’

 ক্লাস বন্ধ রেখে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ এবং অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবক আবদুল জব্বার বলেন, একজন জনপ্রতিনিধিকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে ভালো কথা। কিন্তু ক্লাস বন্ধ রেখে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা শিক্ষকদের ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম জানান, যাদুরাণী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। গতকাল দুপুরে তিনি দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছিলেন। এ সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেখানে এসে তাঁকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেয়। বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ করে এমনটি করা ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল রাত সাড়ে সাতটার দিকে প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।