নেশার টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন আশেক

এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে আশেক হোসেনের। বদলগাছি, জয়পুরহাট, ২১ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো
এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে আশেক হোসেনের। বদলগাছি, জয়পুরহাট, ২১ মার্চ। ছবি: প্রথম আলো

ছেলের সাজার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে অপেক্ষা করছিলেন মা আছিয়া বেগম। এক বছর কারাদণ্ডাদেশের রায় শুনে খুশিও হয়েছেন। এই ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায়।

আজ বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুম আলী বেগ এই কারাদণ্ডাদেশ দেন।

বদলগাছি থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিলন জানান, ইউএনও কার্যালয়ের ভেতরে মেঝেতে বসিয়ে রাখা যুবকের নাম আশেক হোসেন (২০)। তিনি উপজেলার খামার আক্কেলপুর গ্রামের শাহাবুল আলমের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে বাড়ির জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে তাঁর মা অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। আজ সকালে আশেক নিজ বাড়িতে নেশা করছিলেন। পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে নেশার উপকরণসহ তাঁকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে।

মা আছিয়া বেগম বলেন, ‘আমার দুই সন্তানের মধ্যে আশেক ছোট আর মেয়ে বড়। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সে ঘর-সংসার করছে। ছেলেকে পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে লেখাপড়া করেনি। এলাকার খারাপ লোকজনের সঙ্গে মিশত। পরে মাদক সেবন করতে শুরু করে। অনেক চেষ্টা করেও ভালো করতে পারিনি।’

আছিয়া বেগম আরও বলেন, ‘আগেও একবার পুলিশ ধরে জেলে পাঠিয়ে ছিল। তখন আমরা জেল থেকে ছাড়িয়ে এনেছিলাম। বাড়িতে আসার পর ফের মাদকসেবন শুরু করে। নেশার টাকার জন্য ঘরের জিনিসপত্র চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। টাকা না পেলে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। বাধ্য হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজকে বাড়িতে বসে নেশা করার সময় পুলিশ ধরে এনেছে। ছেলেকে যেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয় তার জন্য অপেক্ষা করছি। ছেলের যত বেশি সাজা হবে তত বেশি খুশি হব। নেশা ছাড়লে তাকে বের করে আনব।’

পরে এএসআই মিলন হোসেন প্রথম আলোকে জানান, আশেক হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইউএনও মাসুম আলী বেগ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আশেক হোসেনের নেশা করার ধরনের কথা শুনে আশ্চর্য হয়েছি। অত্যাচারে তাঁর মাসহ পুরো পরিবার অতিষ্ঠ ছিল।’