ক্যাম্পাসের ঝোপে নবজাতক, ৯৯৯-এ ফোন, পরে উদ্ধার

বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস থেকে উদ্ধার করা নবজাতক।
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস থেকে উদ্ধার করা নবজাতক।

বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরের জঙ্গল থেকে ফুটফুটে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে নবজাতকটিকে কে বা কারা ওই স্থানে ফেলে যায়। এ সময় নবজাতকের কান্না শুনতে পান ক্যাম্পাসে হাঁটতে বের হওয়া কলেজের দুই শিক্ষার্থী শামীম রেজা ও এমবিএর আবদুল্লাহ। তাঁরা কাছে গিয়ে নবজাতকটিকে পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯–এ ফোন করেন।

রাত ১০টার দিকে বগুড়া শহরের স্টেডিয়াম ফাঁড়ি পুলিশ নবজাতকটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া নবজাতকটির মা-বাবার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

ওই হাসপাতাল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল আজিজ মণ্ডল বলেন, নবজাতকটি হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু বিভাগের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। নবজাতকের ঠোঁট ও তালুকাটা। এ কারণে নিঃসন্তান এক দম্পতি শিশুটি দত্তক নিতে এসেও ফিরে গেছেন। তবে হাসপাতালে শিশুটির দেখভাল করছেন শহরের খান্দার এলাকার পারভীন বেগম নামের এক নারী।

বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম রেজা বলেন, তাঁরা রাতে কলেজ ক্যাম্পাসে হাঁটছিলেন। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার–সংলগ্ন এলাকায় ছোট ছোট গাছের ঝোপ থেকে নবজাতকের কান্না শুনতে পান। পরে সেখানে গিয়ে ফুটফুটে নবজাতকটিকে সুস্থ অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় গায়ের গেঞ্জি খুলে নবজাতকটিকে মুড়িয়ে সাহায্যের জন্য ৯৯৯–এ ফোন করেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও শিশুরোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতকটি মেয়ে। তার বয়স এক দিন হতে পারে। ওজন আনুমানিক আড়াই কেজি। জন্ম থেকেই তার ঠোঁট ও তালু কাটা। সে সুস্থ রয়েছে। খবর পেয়ে শিশুর দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক এক দম্পতি গতকাল সকালে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু নবজাতকের ঠোঁট কাটা হওয়ায় তাঁরা ফিরে যান।

বগুড়া শহরের স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মুস্তাফিজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে বুধবার রাত ১০টার দিকে নবজাতকটিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বর থেকে উদ্ধার করা হয়। কলেজ ক্যাম্পাসে নবজাতকটি কীভাবে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নবজাতকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ছাড়াও আশপাশের আবাসিক এলাকা ও ছাত্রী হোস্টেলগুলোতে খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবে এখনো নবজাতকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চলতি মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হোস্টেলের ট্রাংকের ভেতর থেকে একটি নবজাতক উদ্ধার হয়। সরকারি আজিজুল হক কলেজ চত্বরেও বেগম রোকেয়া ছাত্রী হোস্টেল রয়েছে।