শিক্ষকের গাড়িচাপায় আহত ছাত্রীর অস্ত্রোপচার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের গাড়িচাপায় আহত শিক্ষার্থী আয়শা মোমেনার পায়ের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসকেরা জানান, আয়শার পা দ্রুত সেরে ওঠার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।

এ ঘটনায় আয়শার পরিবারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহন করছেন।

আহত আয়শা মোমেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

আয়শার বড় ভাই আবদুল্লাহ সুমন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত সব সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা কোনো অভিযোগ করিনি। ওর চিকিৎসা ও পড়াশোনার ভালোর জন্য বিভাগের সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত।’ তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় আয়শার বাঁ পায়ের গোড়ালির ওপর থেকে ভেঙে গেছে। গতকাল বিকেলে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। পরে চিকিৎসকেরা জানান, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। আয়শা আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন বলে তাঁরা আশাবাদী।

গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আয়শার চিকিৎসার বিষয়ে একটি সভা করেন। পরে উপাচার্য মীজানুর রহমানের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

ওই বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমা আক্তার বলেন, তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আয়শার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় গ্রহণ করবেন অভিযুক্ত শিক্ষক, আয়শার পড়াশোনায় যেন পিছিয়ে না পড়েন, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে, তাঁকে এককালীন সহায়তা দিতে হবে এবং ক্যাম্পাসে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘তার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রক্টরকে বলা হয়েছে।’

আর অভিযুক্ত আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই আমি অনুশোচনায় ভুগছি। তাঁর (আয়শার) পরিবার সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাঁর অপারেশনের (অস্ত্রোপচার) খরচ হাসপাতালে জমা করে দিয়েছি। আমি প্রথম থেকেই নিজের সন্তানের মতো তাঁর দায়িত্ব নিয়েছি। একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে তাঁর দায়িত্ব নেব।’

গত বুধবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন অংশগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনের গাড়ির চাকার নিচে পড়ে আহত হন আয়শা।