ছোটদের বড় বইমেলা

শিশু একাডেমীর বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশুদের সমবেত নৃত্য পরিবেশনা। ছবি: প্রথম আলো
শিশু একাডেমীর বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশুদের সমবেত নৃত্য পরিবেশনা। ছবি: প্রথম আলো

আয়োজনটি শুধুই ছোটদের জন্য। তবে পরিসরে বেশ বর্ণাঢ্য। শিশু একাডেমীর খোলা প্রাঙ্গণে ৭৬টি স্টল নিয়ে বসেছে বইয়ের বিশাল মেলা, যাতে আছে শুধুই শিশুদের জন্য লেখা বই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু একাডেমী চত্বরে গিয়ে দেখা গেল বইমেলার আমেজটা অন্য রকম। বড়দের ভিড় নেই, নেই অযাচিত কোলাহল। মা-বাবার হাত ধরে ঘুরছে শুধুই শিশুরা। নিজেদের পছন্দের বই নেড়েচেড়ে দেখেছে, কিনেছেও। এসব মিলিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন করো রঙিন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুধু শিশুদের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে বইয়ের মেলা।

কাল ছিল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। শত শিশুর কলকাকলিতে মুখর পরিবেশে বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে শুরু হয় শিশু একাডেমী বইমেলা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ছয় দিনের এ মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী। সহযোগিতায় রয়েছে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি।

মেলার উদ্বোধন করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার। এতে শিশু একাডেমীর চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিলন কান্তি নাথ এবং শিশু একাডেমীর পরিচালক আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানে শিশু একাডেমী আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুকে লেখা চিঠি’ আয়োজনের সেরা দশ প্রতিযোগীকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে ‘সেরাদের সেরা’ পুরস্কার পেয়েছে যশোরের কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন।

আনিসুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে শিশুদের ফেসবুক-ইউটিউবে ঝুঁকে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তাদের বই পড়ার সময় বের করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নিজের শ্রম, মেধা ও বিচক্ষণতা দিয়ে সামান্য একজন কর্মী থেকে মানুষের নেতা হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। শিশুদের প্রতি তাঁর অনেক অনুরাগ ছিল। শিশুদের তিনি ভালোবাসতেন। যার কারণে তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।

সেলিনা হোসেন বলেন, ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো বড় না হলে, তাদের জ্ঞানের পরিধি যদি ঠিকমতো না বাড়ে; নিজের দেশকে, নিজের মানবতা নিয়ে যদি বড় হতে না পারে, তাহলে দেশের জন্য মঙ্গলকর হয় না। তারা বেড়ে উঠবে সুস্থ, সুন্দর, মানবিক চেতনায়; এটাই প্রত্যাশা।

মেলায় শুধু শিশুতোষ বই নিয়ে যোগ দিয়েছে ৭৬টি প্রতিষ্ঠান। ২৫ শতাংশ ছাড়ে নিজেদের বইগুলো কিনতে পারবে শিশুরা। মেলা প্রাঙ্গণে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লেখক-পাঠকের কথোপকথন, সিসিমপুরের বিশেষ আয়োজন। এ মেলা উপলক্ষে আজ শুক্রবার থাকছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ২৪ মার্চের সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকছে তারকাশিল্পী পার্থ বড়ুয়ার সংগীত পরিচালনায় জাতীয় শিশু পুরস্কার বিজয়ী শিশুশিল্পীদের পরিবেশনায় ছড়াগানের আসর।

২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে ছুটির দিন মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়। চলবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।