বিদেশে পাঠানোর কথা বলে...

>

• সিরাজুলের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নেন ওয়াহেদ
• বলেছিলেন মালয়েশিয়া নিয়ে যাবেন

ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নামে নওগাঁ সদর উপজেলার এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতারণার শিকার ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম। বাড়ি সদর উপজেলার বলিহার ফারাদপুর গ্রামে।

জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মহাদেবপুর উপজেলার ওয়াহেদ আলী মণ্ডল নামের এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। মালয়েশিয়ায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে এক বছর আগে তাঁর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নেন ওয়াহেদ। কিন্তু এখনো তাঁকে বিদেশে পাঠাতে পারেননি এবং টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে টাকা ফেরত পেতে সিরাজুল নওগাঁর আমলি জ্যেষ্ঠ হাকিম আদালতে মামলা করেছেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।

মামলার আরজি ও ভুক্তভোগী সিরাজুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কয়েক কিস্তিতে তাঁর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নেন ওয়াহেদ আলী। জামানত হিসেবে ওয়াহেদের কাছে ফাঁকা চেক নেন সিরাজুল। টাকা নেওয়ার পর থেকে তাঁকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো নিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন ওয়াহেদ। ছয় মাস পরেও বিদেশে না পাঠানোয় ফাঁকা চেকে টাকার অঙ্ক বসিয়ে ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে সিরাজুল জানতে পারেন ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিসও হয়। কিন্তু সেখানে কোনো সুরাহা হয়নি। টাকা চাইতে গেলে সিরাজুলকে হত্যার হুমকি দেন ওয়াহেদ। এ ঘটনায় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন সিরাজুল। তিন-চার মাস ধরে ওয়াহেদ আলী লাপাত্তা। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেন সিরাজুল। তবে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে নানা মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছেন ওয়াহেদ।

সিরাজুল বলেন, ‘জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে এবং এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে ১৬ লাখ টাকা ওই প্রতারককে দিয়েছি। এখন দিনমজুরের কাজ করে পরিবার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর সপ্তাহে সপ্তাহে সুদের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। সংসারের অভাবমোচনের জন্য আমার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজও করছে।’

বলিহার ইউপির সদস্য দেবেন্দ্রনাথ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয় ইউপিতে একাধিকবার বৈঠক করেছি। কিন্তু ওয়াহেদ আলী প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের বিচার মানতে চান না।’ ’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, থানায় একটি জিডি হয়েছে। তা ছাড়া, বিষয়টি নিয়ে আদালতেও মামলা চলমান রয়েছে। এরপরও অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।