সেই রুহুল আমিনের জামিন বাতিল করলেন হাইকোর্ট

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় আসামি রুহুল আমিনকে দেওয়া জামিন বাতিল করে এর আগে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন (রিকল) হাইকোর্ট। আজ শনিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ রিকল করেন।

এর আগে ১৮ মার্চ হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুহুল আমিনের করা জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে রুলসহ তাঁকে এক বছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট এর আগে দেওয়া জামিন আদেশ রিকল করেছেন। পরবর্তী আদেশের তারিখ ২৫ মার্চ ধার্য করেছেন আদালত।

সাইফুর রহমান জানান, রহুল আমিন কারামুক্তি পাননি। হাইকোর্টের এ আদেশের ফলে তাঁর জামিন থাকছে না। তিনি কারামুক্তি পাবেন না।

আইনজীবী সূত্র বলেছে, ওই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী ৩১ ডিসেম্বর চরজব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারে মো. সোহেল (৩৫), মো. হানিফ (৩০), মো. স্বপন (৩৫), মো. চৌধুরী (২৫), মো. বেচু (২৫), বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০), আবুল (৪০), মোশারফ (৩৫) ও ছালা উদ্দিনের (৩৫) নাম উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে ৪ জানুয়ারি রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নিম্ন আদালতে তিনি জামিন চেয়ে বিফল হলে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

আজ হাইকোর্টের জামিন দানকারী বেঞ্চ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বসেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায়। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আজ ছুটির দিন হলেও আদালত বসেছিলেন। ওই মামলায় আটজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে। জামিন আবেদনের তথ্যেই উল্লেখ আছে রুহুল আমিন হুকুমদাতা। অথচ জামিন আবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়নি, যা গুরুতর তথ্য গোপন। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। হাইকোর্ট রুহুল আমিনের জামিন বাতিল করেছেন। ২৫ মার্চ পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী গত ৩০ ডিসেম্বর এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান। ওই নারী বলেছিলেন, ভোটের দিন আসামিরা তাঁকে তাঁদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হলে এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে যুবকেরা তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর ওই দিন রাতে বাড়িতে গিয়ে তাঁরা তাঁকে মারধর ও ধর্ষণ করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের লোক।