বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুকে বাঁচাতে বন্ধুদের লড়াই

গোলাম সারোয়ার
গোলাম সারোয়ার
>

.চিকিৎসার অভাবে এখন দুটি কিডনিই প্রায় বিকল হয়ে পড়েছে
.হাল ছাড়েননি সহপাঠীরা
.সারোয়ার সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত একবেলা না খেয়ে খাবারের টাকা জমিয়ে রাখবেন

তিন বছর আগে কিডনি রোগ ধরা পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম সারোয়ারের। চিকিৎসার অভাবে এখন দুটি কিডনিই প্রায় বিকল হয়ে পড়েছে। টাকার অভাবে তাঁর চিকিৎসা করাতে পারেনি পরিবার। তবে হাল ছাড়েননি সহপাঠীরা।

চিকিৎসার জন্য তিনজন সহপাঠী সারোয়ারে সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছেন। যেসব সহপাঠী রাজশাহীতে আছেন, তাঁরাও থেমে নেই। আর্থিক সাহায্য জোগাতে প্রতিদিন ছুটে বেড়াচ্ছেন রাজশাহীর পদ্মার পাড়ে, কখনো নাটোরে আবার কখনো চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, সারোয়ার সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন একবেলা না খেয়ে খাবারের টাকা জমিয়ে রাখবেন।

১৯ মার্চ চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গোলাম সারোয়ারকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ইউরোলজিস্ট এ টি এম আমানুল্লাহর অধীনে আপাতত চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকায় সারোয়ারের পরিবারের তিন সদস্যের সঙ্গে গিয়েছেন তিনজন সহপাঠী। তবে আসনের অভাবে এখনো সারোয়ারকে হাসপাতালে ভর্তি করা যায়নি।

গোলাম সারোয়ারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সারোয়ারের বাড়ি নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক দিন আগে। বাড়িতে আছেন মা ও দুই ভাই। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে গোলাম সারোয়ারের মূত্রনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় কিডনির সমস্যা প্রকট হয়ে পড়ে। এখন দুটি কিডনিই প্রায় বিকল হয়ে পড়েছে। সারোয়ারের সুস্থতার জন্য তাঁর শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে অথবা নিয়মিত ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু নিয়মিত ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো তাঁর পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। সারোয়ারের মাসহ তিনজন নিকটাত্মীয় তাঁকে একটি কিডনি দান করতে চান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক জানিয়েছেন, মূত্রনালিতে অস্ত্রোপচার ও কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অন্তত ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন।

গোলাম সারোয়ারের সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছেন তাঁর তিন বন্ধু শাহীন আলম, শাফিউল আন্তিকাম ও চঞ্চল আহমেদ। শাহীন আলম বলেন, ‘সারোয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছিল। আশা করি সে সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে আবার ফিরে আসবে।’

সবার প্রচেষ্টায় প্রায় চার লাখ টাকা জোগাড় করেছেন সারোয়ারের সহপাঠীরা। তাঁর পরিবার ও সহপাঠীরা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। চিকিৎসায় সহায়তা করার জন্য ০১৭৬৭৭৬৫৮২৫ (বিকাশ) ও ০১৯৩০৯১৯২৬৭৯ (ডাচ্-বাংলা)—এই দুটি নম্বরে টাকা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।