বর্ষায় জলাবদ্ধতা ঠেকাতে রাস্তা-নালা সংস্কার

দক্ষিণ কুনিপাড়া এলাকায় নালা তৈরি ও সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে।  প্রথম আলো
দক্ষিণ কুনিপাড়া এলাকায় নালা তৈরি ও সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। প্রথম আলো

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার দক্ষিণ কুনিপাড়ার নিচু সড়কের সংস্কার ও পানিনিষ্কাশনের কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আসছে বর্ষায় এ এলাকায় যাতে জলাবদ্ধতা না হয় সেই লক্ষ্যে নতুন করে পানি ও সড়ক সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে বলে জানায় সংস্থাটি।
গতকাল শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হাতিরঝিল–সংলগ্ন দক্ষিণ কুনিপাড়া এলাকার পুরো সড়কে কর্মযজ্ঞ চলছে। সড়কের প্রায় পুরোটাই খুঁড়ে ফেলা হয়েছে। পানিনিষ্কাশন নালার জন্য তৈরি সিমেন্টের পাইপ, ইট এবং খুঁড়ে তোলা মাটি রাস্তার ওপর রাখা। সরু পথে দুজনের পাশাপাশি হাঁটার জায়গা নেই। আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন গলিতে আট-দশটি বড় চওড়া সিমেন্টের পাইপ রাখা আছে। এই গলির এক অংশ কাটা হচ্ছে। কাটা অংশের পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাঁটছে মানুষ।
রামপুরা, মধুবাগ, মহানগর প্রজেক্ট এবং হাতিরঝিল থেকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় যেতে কুনিপাড়ার এই সড়কটি ব্যবহার করা হয়। হাতিরঝিল থেকে উত্তর দিকে বেশ নিচু কুনিপাড়া-বউবাজার-বেগুনবাড়ি এলাকা। অল্প বৃষ্টিতে এ এলাকা তলিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি স্কুল এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এ এলাকায় আছে।
এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ এলাকায় পানিনিষ্কাশনের নালা ছিল সরু এবং আবর্জনায় পূর্ণ। এ কারণে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হতো এবং পানি সরতে বেশ সময় লাগত।
কুনিপাড়া আজিম বক্স জামে মসজিদ গলির মো. পলাশ নামের এক দোকানি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে হাতিরঝিলের বড় ট্রাক ছাড়া সব গাড়িই ঢুকত। তবে এক মাস ধরে তা যাচ্ছে না। রাস্তা নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। রাস্তার কাজ শেষ হলে এ সমস্যা থাকবে না বলে তিনি আশা করেন। তেজগাঁও শিল্প এলাকার বউবাজারসংলগ্ন দক্ষিণ কুনিপাড়া এলাকায় সংস্কারকাজ চলায় এলাকার মানুষের সাময়িক দুর্ভোগ হলেও আগামী দিনে চলাচলের সুফল পেতে এ সমস্যা মেনে নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘খিলগাঁও থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে যাই। পথ সংক্ষেপ করতে মধুবাগ সেতু পার হয়ে বউবাজার দিয়ে হেঁটেই ক্যাম্পাসে চলে যেতে পারি। এক মাসের কিছু বেশি সময় কুনিপাড়া দিয়ে রাস্তার কাজ চলছে বলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে এবার পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত হলে বর্ষায় হয়তো এই পথে চলাচলে বিড়ম্বনা কমবে।’
ডিএনসিসির এই কাজ করছে খালেক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এর সহকারী ঠিকাদার বশির মিয়া বলেন, এ এলাকায় সরু নালা দিয়ে পানিনিষ্কাশন হতো। এখন ৩৬ ইঞ্চি পাইপ বসানো হচ্ছে। এ কাজ শেষ হলে স্ল্যাব বসিয়ে সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া হবে। আগের চেয়ে এ রাস্তা আরও প্রায় ৪ ইঞ্চি উঁচু করা হবে। তখন বৃষ্টির পানি দ্রুত সরে যাবে।
ডিএনসিসির উপসহকারী প্রকৌশলী এজাজুল ইসলাম আনসারি (অঞ্চল–৩) প্রথম আলোকে বলেন, এলাকার উন্নয়নে এ কাজগুলো স্থানীয় কাউন্সিলরদের চাহিদার ভিত্তিতে ডিএনসিসির রাজস্ব বাজেট থেকে করা হচ্ছে। বেগুনবাড়ি ও কুনিপাড়া এলাকার বিভিন্ন সড়কে পয়োনালা ও বৃষ্টির পানি সরানোই এ কাজের মূল উদ্দেশ্য। আগামী এপ্রিল নাগাদ এ কাজ শেষ হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর হবে বলে তিনি আশা করেন।