মুদ্রা-দেশলাই নিয়ে ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী

মুদ্রা, ডাকটিকিট ও দেশলাইয়ের ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী মুগ্ধ করছে দর্শনার্থীদের।
মুদ্রা, ডাকটিকিট ও দেশলাইয়ের ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী মুগ্ধ করছে দর্শনার্থীদের।

সবচেয়ে ছোট দেশলাই হাতের আঙুলের ওপর ধরে রাখতে হয়। না হলে খুঁজে পাওয়াটাই মুশকিলের। আবার সবচেয়ে বড় দেশলাই বাক্সটি দেখে বই ভেবে ভুল হতে পারে। এখানেই শেষ নয়, চমক লেগে যাবে গুপ্ত আমলের সোনার মোহর, বাহামা দ্বীপের পঞ্চাশ সেন্টের নোট বা অতিদুর্লভ ডাকটিকিট দেখেও।
এমন সব ব্যতিক্রমী সংগ্রহ নিয়ে ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। তিন বন্ধু সাকিল হক, রবিউল ইসলাম ও গোলাম আবেদের দীর্ঘদিনের সংগ্রহ নিয়েই দ্বিতীয়বারের মতো এই প্রদর্শনীর আয়োজন।
গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া প্রদর্শনী চলবে কাল সোমবার পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যতিক্রমী সংগ্রহ দেখতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
দৃক গ্যালারির ভেতর প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে দেয়ালে দেয়ালে কাচের ফ্রেমে টাঙানো দেশ-বিদেশের নানান ডাকটিকিট এবং বিভিন্ন ধরনের নোট। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমলের রাজস্ব স্ট্যাম্পসহ দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। সেই সঙ্গে আছে বাংলাদেশের প্রথম আটটি ডাকটিকিট দিয়ে তৈরি আটটি দেশলাইয়ের বাক্স।
সাকিল হক, রবিউল ইসলাম ও গোলাম আবেদের শুরুটা শখের বসেই হয়েছিল অনেকটা। সেই শখ এখন হয়ে উঠেছে নেশা। ভালো দেশলাইয়ের খোঁজে অতিক্রম করেন দেশের সীমারেখাও। বিস্তর পড়াশোনাও করছেন। যেমন মুদ্রার একাল-সেকাল নিয়ে অনায়াসেই বলতে পারেন বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
গত বছরের প্রদর্শনীতে সাড়া দেখেই এবারের আয়োজন। প্রদর্শনীটি ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। তিন বন্ধুর ইচ্ছে প্রতিবছরেই একবার করে আয়োজনটি করার।
ধানমন্ডির বাসিন্দাদের পাশাপাশি নগরের অন্য এলাকা থেকেও দর্শনার্থীরা এসেছিলেন কালের সাক্ষী হতে। পরিবারের পাশাপাশি বন্ধুদের দল নিয়ে হাজির হয়েছেন অনেকেই। প্রত্যেক দর্শকদের চোখেমুখে ছিল বিস্ময়। ঘুরে ঘুরে দেখেছেন তাঁরা রবিউল ইসলামের সংগ্রহে থাকা স্বাধীন, বিলুপ্ত রাষ্ট্র, স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র, দ্বীপরাষ্ট্র, পরাধীন রাষ্ট্রের মুদ্রা। শুধু দেশভিত্তিক নয়, তাঁর কাছে আছে বিষয়ভিত্তিক মুদ্রাও। ব্রিটিশ ভারতীয়, ভারতীয় স্বাধীন, প্রিন্সিপাল রাজ্যভিত্তিক, বাংলার সুলতানি আমল, মোগল আমলের মুদ্রাও। অন্যতম আকর্ষণ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্যাংক নোটটি।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছুই ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছে যেন। স্বচক্ষে তা অবলোকন করে শিহরিত হয়েছেন দর্শনার্থীরা।