নিয়ম ভেঙে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীরকে নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক এ অভিযোগ করেন।

কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, হুমায়ুন কবীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শুধু হুমায়ুন কবীরকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তাঁর (হুমায়ুন) পক্ষে যায়, এমনভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এরপরও তিনি নিয়োগের সব শর্ত পূরণ করতে পারেননি। এ অবস্থায়ও চলছে হুমায়ুন কবীরকে নিয়োগের প্রক্রিয়া। চলতি মাসের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।

তাঁরা আরও বলেন, গত বছরের ২৫ মে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়। ওই সময় হুমায়ুনকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের পাঁয়তারা শুরু হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা কমিটি হুমায়ুনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেনি। সম্প্রতি একই বিজ্ঞপ্তির অনুকূলে আবারও হুমায়ুনকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান পরিকল্পনা কমিটিকে আদেশ দেন হুমায়ুনকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও পরিকল্পনা কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী সিদ্দিকী বলেন, ‘হুমায়ুন কবীর নিয়োগের সব শর্ত পূরণ করেননি। তাঁকে নিয়োগের সুপারিশ করা হলেও আমি তাতে সম্মত নই। সুপারিশে আমি সই করিনি।’

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের জন্য যোগ্যতা হিসেবে শিক্ষাজীবনের চারটি সনদে প্রথম বিভাগ প্রয়োজন হলেও হুমায়ুন সে শর্ত পূরণ করেননি। তিনি তিনটি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি এবং একটিতে দ্বিতীয় শ্রেণি নিয়ে আবেদন করেন। এ ছাড়া সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য অন্তত এক বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার শর্তটিও তিনি পূরণ করতে পারেননি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীর ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা শিথিলযোগ্য বলা হলেও শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে তা বলা হয়নি।

কয়েকজন শিক্ষকের অভিযোগ, হুমায়ুনের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করার সময়ের মধ্যে ১৫ বছর ব্যবধান রয়েছে। তিনি ১৯৯২ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৭ সালে। এ ছাড়া সনদ জালিয়াতির অভিযোগে তাঁর (হুমায়ুন) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় হুমায়ুনকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হুমায়ুন বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে, বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলযোগ্য। আমার বিশেষ যোগ্যতা আছে। সব মিলিয়ে বিজ্ঞপ্তির সব শর্ত পূরণ করেছি বলে জানি।’

উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হুমায়ুন কবীরের নিয়োগের বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছে।