এবার গোলাপগঞ্জে ডেকে নিয়ে হত্যা

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নিমাদল পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুস শহীদ (৪৫)। পেশায় দিনমজুর। চার দিন আগে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় কয়েক ব্যক্তি। এরপর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গত শুক্রবার দুপুরবেলা পুকুরে পাওয়া গেছে লাশ। গলাকাটা ও মুখ থেঁতলানো দেখে পুলিশের ধারণা, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে গোলাপগঞ্জ থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী রেখা বেগম একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ একই এলাকার বাসিন্দা এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে গতকাল শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার কৌশলে সিলেটে ২৮ দিনে পৃথক ঘটনায় সাতটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বশেষ ঘটনা এটি। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সিলেটের গোয়াইনঘাটে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ও ১২ মার্চ সিলেট নগরে দুটি, ১৩ মার্চ কোম্পানীগঞ্জে এবং ১৫ ও ১৮ মার্চ ওসমানীনগরে দুটি খুনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ওসমানীনগরের কিশোর মোস্তাফিজুর ও প্রবাসীর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক আনিছ উল্লাহ, সিলেট নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় স্কুলছাত্র শাহেদ হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ডেকে নিয়ে হত্যার কৌশলের সর্বশেষ শিকার আবদুস শহীদ দুই মেয়ে ও দুই ছেলের বাবা। তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়িতে ছিলেন শহীদ। কিছুক্ষণ পর একদল লোক তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তাঁদের কিছু জমিজমা নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে বিরোধ ছিল। এ বিরোধের জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, নিমাদল পূর্বপাড়া গ্রামের মিনি ক্লিনিকের পাশের পুকুরে শুক্রবার একটি লাশ ভাসছিল। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবেশীসহ পরিবারের সদস্যরা সেখানে যান। তাঁরা লাশটি আবদুস শহীদের বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর তারা লাশটি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

গোলাপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শংকর চন্দ্র দেব সুরতহাল প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, লাশের গলাকাটা ও মুখের একাংশ থেঁতলানো ছিল। এতে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জেরে খুন হয়েছেন শহীদ। নিখোঁজ হওয়ার রাতেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে।

গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম ফজলুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, স্ত্রী রেখা বেগমের ভাষ্য অনুযায়ী শুক্রবার রাতেই এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ করা ছয় আসামির মধ্যে শাহনুর মিয়া (৫০), আফজাল মিয়া (৩০), মহসিন মিয়া (৩৩) নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।