'মাদক না ছাড়লে পরিণতি কী ভয়াবহ হবে, তা আল্লাহই জানেন'

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আপনারা মাদক ছেড়ে দেন, আত্মসমর্পণ করেন। না হলে পুলিশ বাহিনী আপনাকে খুঁজে বের করবে। মাদক না ছাড়লে পরিণতি কী ভয়াবহ হবে, তা আল্লাহই জানেন।’

আজ রোববার বিকেল সোয়া তিনটার দিকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানা ভবনের প্রশাসনিক কার্যালয়ের উদ্বোধন শেষে নাপিতেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এক সুধী সমাবেশে আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশ, মেধা ও নতুন প্রজন্মকে বাঁচানোর জন্য এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। যারা আত্মসমর্পণ করবে, সরকার থেকে তাদের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকার জন্য সৈনিকদের ইয়াবা ট্যাবলেট খাওয়ানো হতো। কিন্তু এখন ইয়াবা নেশা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যারা ইয়াবা বিক্রি করেন, তারা জানেন না যে এর ভয়াবহতা কত। একটানা তিন বছর ইয়াবা সেবন করলে মেধা থাকবে না। মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাদক থেকে যুবশক্তিকে বাঁচাতে না পারলে আমাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। ইসলামেও মাদকের বিরুদ্ধে বলা আছে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘দেশে কারাগারগুলোতে আসামি ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার। কিন্তু বর্তমানে কারাগারগুলোতে ৯০ হাজারের বেশি আসামি রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকই মাদক মামলার আসামি। আমরা মাদক আইন সংশোধন করেছি, মাদক আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করেছি। সেগুলো আপনারা দেখেছেন। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে আমরা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালী করেছি। যারা মাদক ব্যবসা করে, তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও নানা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একসময় এ এলাকাগুলো অরক্ষিত ছিল। সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। কারণ, আমরা পুলিশ বিভাগকে সংগঠিত করেছি। পুলিশ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। পুলিশ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করেছে।’

সুধী সমাবেশে ফুলছড়ি উপজেলার ৭৪ জন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। তাঁরা মাদক ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসা করার ঘোষণা দেন। পরে তাঁদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এর আগে ফুলছড়ির গজারিয়া এলাকায় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র চালু করা হয়। দুপুর একটায় গজারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ফলক উন্মোচন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরে বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাইবান্ধা পুলিশ লাইনস মাঠে জেলা পুলিশ আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং পুরস্কার বিতরণ করেন।