কত পার্সেন্ট ভোট পড়ল, তা নিয়ে ইসির মাথাব্যথা নেই

নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশন

নির্বাচনে কত পার্সেন্ট ভোট পড়ল, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো মাথাব্যথা নেই বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেছেন, পারসেনটেজ কত হলো, এটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বিষয়টা হলো শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হয়েছে কি না।

পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ শেষে আজ রোববার বিকেলে নির্বাচন ভবনে হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

ইসি সচিবের কাছে উপজেলায় ভোটের হার কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশন বলেছেন অনেকেই (দল) নির্বাচন করে নাই (অংশগ্রহণ করেনি)। প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনে ৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। দ্বিতীয় দফায় রাঙামাটি জেলা বাদ দিয়ে ৪১ শতাংশ ভোট পড়েছে। রাঙামাটির ফলাফল যদি আমরা পাই, তাহলে গড়ে আমাদের মনে হয় ৪৫ শতাংশ হবে। আর তৃতীয় ধাপে আমরা ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করছি।’

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক জোট নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা কিন্তু ভোটে আসেনি। অপরদিকে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না আসার জন্য তাদের প্রচারণা আছে। এসব আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পারসেনট্যান্স ইজ নট দ্য মেটার। পারসেনট্যান্স কত হলো এটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমাদের বিষয়টা হলো শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হয়েছে কি না, নির্বাচন কমিশন এমন বলেছেন।’

গত দুই দফায় ভোটের হার কম হওয়ায় নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারায় কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আমাদের দেশের কোনো আইন নেই যে কত শতাংশ ভোট দিতে হবে বা গ্রহণযোগ্যতার জন্য কত শতাংশ ভোট পড়তে হবে।’

রোববার ২৫ জেলার ১১৭টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। অনিয়মের কারণে ১৪টি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে কটিয়াদির নির্বাচন।

ইসি সচিব বলেন, কটিয়াদিতে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও থানার একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত করে আরও কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের চন্দনাইশে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন পুলিশ কনস্টেবল মারাত্মক আহত হয়েছেন। তিনি তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে হেলিকপ্টারে করে এনে রাজধানীর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়েছে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন মনে করছে, মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোটের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, রংপুর সদর, গোপালগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ সদর ও মেহেরপুর সদর—এই চারটি উপজেলায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এতে মোট ৩৪০টি কেন্দ্রে ২ হাজার ২১৩টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রযুক্তি সহায়তায় ভোট গ্রহণ করায় এইসব কেন্দ্রে কোনো প্রকার অনিয়মের সুযোগ কেউ পায়নি। মানুষ ইভিএমে ভোট দিয়ে আনন্দ পেয়েছে।

বিকেল চারটায় ভোট শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা পরেও কেন ইভিএমের ফলাফল জানানো যাচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ভোট শেষ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই ইভিএমের ফলাফল প্রিন্ট দিতে পারি। কিন্তু ৪টায় ভোট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে বিকেল ৪টার পরও ভোটার থাকেন। আইন অনুযায়ী, তাদের ভোট নিতে হয়। এ ছাড়া ফলাফল সমন্বয় করে কেন্দ্রগুলো থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতেও কিছুটা সময় লাগে। তাই একটু বিলম্ব হয়।

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে সম্পন্ন করছে নির্বাচন কমিশন। ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের এবং ১৮ জুন পঞ্চম ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।