অভিযোগপত্র বলছে, ছিনতাইকারীরা গাড়িতে উঠিয়ে এএসপি মিজানকে হত্যা করে লাশ জঙ্গলে ফেলে যায়

এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদার (ফাইল ছবি)
এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদার (ফাইল ছবি)

সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমান তালুকদার (৫০) হত্যা মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। গত সপ্তাহে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম খান ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দিলেও বিষয়টি জানা গেছে আজ রোববার। আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামি হলেন, শাহ আলম বুড্ডা (৬২) ও ফারুক হাওলাদার (৪০)। অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার অপর আসামি জাকির হোসেন (৩৫) ও আয়নাল হক (৪১) পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান।

২০১৭ সালের ২১ জুন রূপনগর থানার বিরুলিয়ার ঢাকা বোর্ড ক্লাবের পূর্ব পাশে জঙ্গল থেকে এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মাসুম তালুকদার বাদী হয়ে রূপনগর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে খুনের মামলা করেন। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, এএসপি মিজান ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেদিন আসামিরা সবাই ইয়াবা খায়। অনুমান ভোর সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার দিকে জসীম উদ্দিন রোডের দিকে মুখ করে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ড্রাইভিং সিটে জাকির, তাঁর বামপাশে শাহ আলম বসা ছিল। মিন্টু, কামাল ও ফারুক যাত্রীবেশে নিচে নেমে লোক খুঁজছিল। হঠাৎ একজন মোটা লোককে ব্যাগসহ আসতে দেখেন। তখন মিন্টু সালাম দিয়ে বলেন, তাঁরা এয়ারপোর্টে যাবেন। লোকটিকে গাড়িতে উঠিয়ে জাকির জোরে গান বাজাতে থাকে। লাইট বন্ধ করে দিয়ে গাড়ি জসীম উদ্দিন রোড হয়ে মোড় নিয়ে হাউস বিল্ডিং যায়। পরে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের দিকে চলে যায়। তখন গাড়ির পেছনে সিটে বসা মিন্টু লোকটির মাথায় আঘাত করেন। গাড়িতে থাকা ঝুট কাপড়ের টুকরা দিয়ে গলায় প্যাঁচ দেয়। কিছুক্ষণ পর আর লোকটির সাড়া শব্দ থাকে না। পরে তাঁরা জঙ্গলে লাশ ফেলে পালিয়ে যান। আসামিরা টিভি সংবাদে জানতে পারে, যে লোকটিকে তাঁরা খুন করে ফেলে রেখে এসেছেন, তিনি পুলিশ অফিসার। নাম এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদার। শাহ আলম, জাকির, মিন্টু, ফারুক ও কামাল মিলে এএসপি মিজানকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে কামালের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

নিহত এএসপি মিজান সাভার হাইওয়ে পুলিশ কর্মরত ছিলেন। নিহতের মেয়ে ও মামলার সাক্ষী সুমাইয়া আক্তার বৃষ্টি ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে বলেন, তাঁর বাবা সেদিন সাহরি খেয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে ভোর রাত সাড়ে ৪ টা থেকে ৫টার সময় রওনা হন। পরে মোবাইলের ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন, তাঁর বাবা খুন হয়েছেন।