'র্যাগিংয়ের শিকার' জাবি শিক্ষার্থী কানে শুনতে পাচ্ছেন না

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই বছর আগে ‘র‌্যাগিংয়ের শিকার’ এক শিক্ষার্থী ঠিকমতো কানে শুনতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়া ৪৫তম ব্যাচের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের এ অভিযোগ আনেন। গত শনিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব জামান। রাকিব বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী ও সাকিব সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ানের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) ক্লাস শুরু হয় ২০১৭ সালের ৯ মার্চ। ক্লাস শুরুর দিনই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের ‘গণরুমে’ ওঠেন। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, সে সময় প্রতিদিন রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর নানা রকম নির্যাতন চালাতেন ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

রাজনের সহপাঠীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৭ মে মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে র‌্যাগিং চলছিল। সেদিন রাজন মিয়াকে পরপর পাঁচ–ছয়টি থাপ্পড় দেন রাকিব হাসান। রাজন এ সময় তাঁকে আর থাপ্পড় না দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে সাকিব জামান তাঁকে আরও ছয়-সাতটি থাপ্পড় দেন। এতে অজ্ঞান হয়ে যান রাজন। পরে রাজনের সহপাঠীরা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে দ্রুত সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এনাম মেডিকেলের চিকিৎসক জানান, তাঁর বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেছে। শিগগিরই অস্ত্রোপচার করাতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সে সময় গণরুমে যাইতাম ঠিকই। কিন্তু কারও গায়ে হাত তুলেছি বলে মনে পড়ে না।’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না। সে সময় কেউ কিছু করে থাকলে তার দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কাজ চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’