পরিত্যক্ত কক্ষে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল উচ্চবিদ্যালয়ের বারান্দায় পাঠদান চলছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা।  প্রথম আলো
নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল উচ্চবিদ্যালয়ের বারান্দায় পাঠদান চলছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। প্রথম আলো

কক্ষসংকটের কারণে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল ইউনিয়নের পারইল উচ্চবিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত মাটির কক্ষে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে একাধিকবার চিঠি দিলেও কোনো কাজ হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা মোট আটটি। এর মধ্যে পাঠদানের উপযোগী শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা পাঁচটি এবং পরিত্যক্ত তিনটি। পাঁচটি কক্ষের একটিতে বসেন প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকেরা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ না থাকায় পরিত্যক্ত কক্ষে পাঠদানে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

প্রধান শিক্ষক জানান, ১৯৬৫ সালে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষানুরাগী মরহুম মুসলিম উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি এখানে তিনটি মাটির কক্ষ তৈরি করে শুরু করেন পাঠদান কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে স্থাপন করা হয় এই পারইল উচ্চবিদ্যালয়। সেই সময় থেকে অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে অর্ধশতাধিক বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আসছে বিদ্যালয়টি। কিন্তু অনেক বছর পার হলেও এই বিদ্যালয়ে কোনো প্রকারের আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। বর্তমানে বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। কক্ষসংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষের বারান্দায় গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। বিজ্ঞানাগার না থাকার কারণে লাখ লাখ টাকা মূল্যের বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম ও উপকরণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষকদের জন্য নেই আলাদা কক্ষ। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, বিদ্যালয় চলাকালে ছাত্রছাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ এসব কক্ষে খেলাধুলা করে। যেকোনো সময় মাটির কক্ষগুলো ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, অনেকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এই সমস্যার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল মামুন বলেন, ওই বিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।