স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

নিহত জনি তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত জনি তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়নের কবুতরখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ৩১ মার্চ এ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নিহত ব্যক্তির নাম জনি তালুকদার (২৫)। তিনি মঠবাড়িয়ার হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সমর্থক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে জনি বাড়ির সামনের মাঠে গরু নিয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জুনায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন লোক তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। বরিশালে নেওয়ার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জনি মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জনি তালুকদারের হাত পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৪ থেকে ১৫টি ধারালো অস্ত্রের জখম ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

জনির চাচা হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি স্বপন তালুকদার অভিযোগ করেন, একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলমকে গত শনিবার রাতে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই মামলায় জনি এজাহারভুক্ত আসামি। রিয়াজুল আলমের ওপর হামলার জের ধরে ইউপি সদস্য জুনায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত লোক জনির ওপর হামলা করে। এসময় আলমগীর হোসেন ও নবী হোসেনসহ কয়েক জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে জনিকে কুপিয়ে জখম করে।

তবে জুনায়েদুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। রিয়াজুল আলমের ওপর হামলা ঘটনায় স্থানীয় থানায় দায়ের করা মামলার বাদী আমি। এ কারণে আমাকে এ হত্যাকান্ডে জড়ানোর চেষ্টা চলছে।’

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা লিখিত অভিযোগ করবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা নেওয়া হবে।

গত শনিবার রাতে রিয়াজ উদ্দিনের সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসাইন মোশারেফ সাকু ও ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলমসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।