আলীকদমের চেয়ারম্যানের পক্ষে-বিপক্ষে কর্মসূচি
বান্দরবানের আলীকদমে সংবর্ধনা নেওয়ার সময় ম্রো তরুণীর সঙ্গে উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কালামের ছবি অন্যভাবে না নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। এদিকে ম্রো তরুণীর সঙ্গে ‘অশোভন’ আচরণের প্রতিবাদে ম্রোরা মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত রোববার এক ম্রো তরুণীর সঙ্গে আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালামের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এই ছবিতে চেয়ারম্যানের আচরণকে অশোভন উল্লেখ করে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গতকালও ছবিটি নিয়ে নানা আলোচনা, প্রতিক্রিয়া হয়।
গতকাল বেলা তিনটায় আলীকদম প্রেসক্লাবের সামনে ম্রোরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে কোনো ব্যানার ছিল না। ‘হয়রানি ও অশ্লীল আচরণের বিচার চাই, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ম্রোরা মানববন্ধন করেন। সলোমন ম্রোসহ কয়েকজন অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানববন্ধনে বাধা দিয়েছে। তাঁরা তাঁদের ন্যায্য দাবি নিয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি।
বিকেল চারটায় ভাইরাল হওয়া ছবির তরুণী, তাঁর বড় ভাইসহ পাড়ার কয়েকজন সংবাদ সম্মেলন করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, সংবর্ধনায় পাড়াবাসীর পক্ষে ওই তরুণী চেয়ারম্যান আবুল কালামকে ফুলের মালা দিয়েছেন। সেখানে শুধু ওই তরুণী নন, আরও অনেক নারী ও পুরুষকে চেয়ারম্যান খুশিতে জড়িয়ে ধরেছেন। পাড়াবাসীও চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে ধরেছেন। এটা অন্যভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। তাঁরা একই পরিবারের মতো।
আলীকদমের ম্রোরা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার কয়েকটি পাড়া মিলে ম্রো, মারমা, ত্রিপুরা ও চাকমারা একটি ম্রোপাড়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সেখানে নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী—সবাই ফুলের তোড়া দিয়ে আবুল কালামকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় একজন ম্রো তরুণীকে তিনি এমনভাবে জড়িয়ে ধরেন, যা দেখতে অশোভন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, ‘পাড়াবাসীর সংবর্ধনায় সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেছি। নির্বাচনে নারী-পুরুষ সবাই রাত-দিন পরিশ্রম করেছেন। ভোটের আগের রাতে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়েছেন। তাই তাঁদের সবার জন্য আমার ভালোবাসা একটু বেশি। তাঁরাও জড়িয়ে ধরেছেন, আমিও ধরেছি—এতে দোষের কিছু নেই।’
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুল হায়দার বলেন, ভাইরাল হওয়া ছবির ব্যাপারে তাঁরা ওই তরুণী ও পাড়াবাসীদের কাছ থেকে খোঁজখবর নিয়েছেন। সবাই বলেছেন, আপত্তিকর কোনো কিছু হয়নি। তারপরও কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।