উপজেলা আ. লীগ সভাপতিসহ ৩৬ জনের নামে মামলা

নিহত জনি তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত জনি তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে জনি তালুকদার (২৫) নামের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত জনি তালুকদারের চাচা স্বপন তালুকদার বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মঠবাড়িয় পৌরসভার মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত জনি তালুকদার উপজেলার কবুতরখালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার কবুতরখালী গ্রামে জনি তালুকদারকে মাঠের মধ্যে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে উপজেলার গুলিসাখালী বাজারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের (আনারস প্রতীক) সমর্থকেরা হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল আলমকে কুপিয়ে জখম করেন। রিয়াজুল আলম আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসাইন মোশারেফ সাকুর সমর্থক। রিয়াজুল আলমকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় স্থানীয় থানায় দায়ের করা মামলায় জনি তালুকদার এজাহারভুক্ত আসামি। জনি এক সময়ে রিয়াজুল আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে তিনি রিয়াজুল আলমের পক্ষ ত্যাগ করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের দলে যোগ দেন।

মামলার বাদী জনি তালুকদারের চাচা হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি স্বপন তালুকদার অভিযোগ করেন, গত শনিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান আলমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে ইউপি সদস্য জুনায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে অর্ধশত লোক জনির ওপর হামলা করে। এ সময় আলমগীর হোসেন ও নবী হোসেনসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে জনিকে কুপিয়ে জখম করেন।

জুনায়েদুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। রিয়াজুল আলমের ওপর হামলা ঘটনায় স্থানীয় থানায় দায়ের করা মামলার বাদী আমি। এ কারণে আমাকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর চেষ্টা চলছে।’

রফিউদ্দিন আহমেদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মঠবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ ব্যাপারী বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে রফিউদ্দিন আহমেদ কিছুই জানতেন না। তাঁকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাঁকে মামলায় জড়িয়েছেন।’

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর ও হানিফ নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।