১৪ বছর ধরে বাক্সবন্দী জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্র!

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্রটি। ১২ মার্চ, মঙ্গলবার। ছবি: আব্বাস হোসাইন
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্রটি। ১২ মার্চ, মঙ্গলবার। ছবি: আব্বাস হোসাইন

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ বছর ধরে বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে একটি জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্র। বছরের পর বছর যন্ত্রটি হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকায় এটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন হাসপাতাল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট) না থাকায় অস্ত্রোপচার কক্ষ চালু নেই। এ কারণে যন্ত্রটি কোনো কাজে লাগছে না।

তবে সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দামি যন্ত্রটি এভাবে পড়ে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে। আপাতত এটি জরুরি বিভাগে ব্যবহার করলে রোগীরা অন্তত সেবা পাবেন। অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামাদি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুমুক্ত হয়।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতে ইসিজি কক্ষের পাশে বারান্দায় বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্রটি। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা জেনেছেন, এটি ১৪ বছর ধরে এভাবে বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে।

রোগীরাও জানেন না বাক্সবন্দী যন্ত্রটি কী বা কী কাজে লাগে। উপজেলার মরিয়মনগর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা খোরশেদ আলম (৪৫) নামের এক রোগী প্রথম আলোকে বলেন, এখানে বাক্সবন্দী জিনিসটা অনেক বছর ধরে দেখছেন। কিন্তু এর ভেতরে কী আছে, তা জানেন না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে ৩১ শয্যা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মিত হয়। ১৯৯৬ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০৬ সালে এই ক্যাম্পাসে নতুন ভবন নির্মিত হয়। ভবনের দ্বিতীয় তলায় নারী ও শিশু ওয়ার্ড, অস্ত্রোপচার কক্ষ, তৃতীয় তলায় পুরুষ ওয়ার্ড, নিচতলায় ফার্মেসি ও বহির্বিভাগের চিকিৎসা চলে। পুরো উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের রাউজান উপজেলার লোকজনও এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী জরুরি বিভাগে সেবা নেন। ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। অন্তর্বিভাগে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জীবাণুমুক্তকরণ যন্ত্রটি ১৪ বছর আগে দেওয়া হয়েছে। এত বড় যন্ত্র হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ওঠানোর মতো কোনো পথ নেই। তা ছাড়া অস্ত্রোপচার কক্ষ চালু না থাকায় এটি ব্যবহার হচ্ছে না।