শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে ছাত্রলীগ নেতার চাঁদা দাবি!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস-সংলগ্ন বিনোদপুরে একটি ভবনে তাঁদের জিম্মি করে রাখা হয়। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আবু ইউসুফ সাজিদ এবং গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের কামারুজ্জামান সুমন।

অভিযুক্তদের একজন মো. মমিনুল ইসলাম দিনার নিজেকে মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনায় আবু ইউসুফ গতকাল রাতেই মতিহার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আবু ইউসুফ বলেন, ‘আমি ও কামারুজ্জামান ভাই বিনোদপুরে একটি ভবনের দুইটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে টিউশনি করি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি সেখানে একাই ছিলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চারজন যুবক এসে আমাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ করেন। তাঁরা আমার মুঠোফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে না চাইলে কামারুজ্জামান ভাইকে ফোন করতে বলেন। আমি তাঁকে ফোন করে ডেকে আনি। কামারুজ্জামান ভাই সেখানে এলে তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে দুই হাজার টাকা দিতে বলে। ওই চারজন কামারুজ্জামান ভাইকে আটকে রেখে টাকা আনার জন্য আমাকে বাইরে পাঠান। আমি সেখান থেকে বের হয়ে এক বড় ভাইকে বিষয়টি জানাই। আমিসহ কয়েকজন পুলিশ নিয়ে আসার আগেই তাঁরা পালিয়ে যান।’

আবু ইউসুফ অভিযোগ করে বলেন, ‘দিনার বলে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিকে আগেও দেখেছি। কিন্তু তাঁর পরিচয় জানতাম না। বাকি তিনজনকেও চিনি না। পরে রাতেই মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

কামারুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ আসার বিষয়টি টের পেয়ে জিম্মিকারীরা একটি মোবাইল নম্বরে টাকা দিতে বলে দ্রুত চলে যান।’

অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘মঙ্গলবার আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। তাই সারা দিন বিনোদপুরে বাসাতেই ছিলাম। আমি কোনোভাবেই এসবের সঙ্গে জড়িত না। অন্য কেউ আমার নাম ভাঙিয়ে কিছু করছে কিনা তা বুঝতে পারছি না।’

মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহিম আজ বুধবার দুপুরে বলেন, ‘ঘটনা শুনে মতিহার থানার পুলিশ নিয়ে আমরা গিয়েছিলাম। তার আগেই অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করা হয়েছে কিনা, জানি না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মতিহার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসআই কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।’

প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেই মতিহার থানার পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তাঁরা গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে মুক্ত করেছে।