চোখে ভাইরাল বাংলাদেশি শ্রমিক!

বাংলাদেশি নির্মাণশ্রমিকের আলোচিত সেই ছবি। ছবিটি টুইটার থেকে নেওয়া
বাংলাদেশি নির্মাণশ্রমিকের আলোচিত সেই ছবি। ছবিটি টুইটার থেকে নেওয়া

প্রথম দেখায় মনে হবে গড়পড়তা কোনো ছবি। কিন্তু ছবির মানুষটির চোখের দিকে তাকালেই এক মুগ্ধতা ভর করবে দর্শকের মনে। সেই অপরূপ চোখ নিয়েই এখন মেতে আছে ইন্টারনেট দুনিয়া। এই একটি ছবি দিয়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি এক নির্মাণশ্রমিক।

মালয় মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবেদিন মুং নামের এক শৌখিন আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই বাংলাদেশি শ্রমিকের ছবি। ছবিটিতে দেখা যায়, ক্যামেরার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন সেই তরুণ। ২১ মার্চ ছবিটি মুং টুইটারে শেয়ার করলে খুব দ্রুত তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে আলোচিত সেই তরুণের নাম জানা যায়নি।

মূলত ভিন্নধর্মী ও নজরকাড়া চোখের কারণেই খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে ছবিটি। ছবিটি মুং টুইটারে শেয়ার করার পর থেকে ২৪ হাজারেরও বেশিবার পোস্টটি রিটুইট হয়েছে। এর পাশাপাশি ৬৮ হাজারের বেশি লাইকও পড়েছে।

ছবিটির নেপথ্যের গল্প শুনিয়েছেন আলোকচিত্রী মুং নিজেই। টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে যেখানে নাশতা করি, সেই জালান আইপোহর কাছাকাছি একটি জায়গায় নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। প্রথমবার যখন তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়, তখন আমি একটি ভিডিও শুট করছিলাম। সেদিন ওর ছবি তোলার সুযোগ হয়নি আমার। কিন্তু পরে তাঁকে আবার ঠিক সেখানেই পেয়ে গেলাম।’

মুং জানান, ওই তরুণের চোখজোড়া এতটাই ব্যতিক্রমী যে সেগুলো ক্যামেরার লেন্সে বন্দী না করে তিনি পারেননি। আকর্ষণীয় চোখের সেই তরুণের লাজুক স্বভাবের জন্য ছবি তুলতে গিয়ে যে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে, সেটি জানাতেও ভোলেননি মুং। তিনি বলেন, ‘তিনি খুবই লাজুক ছিলেন। কোন দিকে তাকাতে হবে, এটিও বুঝতে পারছিলেন না তিনি। বারবার তাঁকে বলছিলাম, আমার ফোনের ক্যামেরার দিকে তাকাতে। কিন্তু একদম সরাসরি লেন্সের দিকে না তাকানো পর্যন্ত এবং তিনি কিছুটা ঘামতে শুরু না করা পর্যন্ত ছবিটা মনমতো হচ্ছিল না। এরপর আমি এই ছবিটি তুললাম। ছবিটি সুন্দর, তাই না?’

এরপর থেকেই একের পর এক রিটুইট হতে থাকে ছবিটি। তরুণের চোখের প্রশংসা করে অনেকে তো এমনটাও বলেছেন, তাঁকে মডেলিংয়ের প্রস্তাবও দেওয়া উচিত! সারা ইজানা নামের একজন রিটুইট করে ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘তাঁকে মডেলিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হোক! তাঁর চোখ, মুখের গড়ন, ঠোঁট—সবকিছুই মডেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত!’ বব মোয়াঙ্গি নামের আরেকজন বলেছেন, ‘আমার একটি প্রশ্ন আছে। কেন এই মানুষটি এখনো মডেলিং শুরু করেননি?’

অনেক টুইটার ব্যবহারকারী মুংয়ের কাছে দাবি জানিয়েছেন এই বলে যে, ওই তরুণ শ্রমিককে খুঁজে বের করে যেন একটি পূর্ণাঙ্গ ফটোশুট করা হয়। হয়তো সেই ফটোশুট থেকেই মডেলিংয়ের দুয়ারে পৌঁছে যাবেন তিনি!

অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশি তরুণের ছবিটি ১৯৮৪ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদে আসা আফগান মেয়ে শরবত গুলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। লাল স্কার্ফ মাথায় সবুজ চোখের সেই আফগান বালিকার ছবি ওই সময় ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল।