বিষক্রিয়ায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু, সংকটাপন্ন যুবলীগ নেতা
>* পুলিশের ধারণা ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড
* রাজনৈতিক নাকি ব্যবসায়িক বিরোধে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মদের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নাছির উদ্দিন (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আক্রান্ত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর আলম।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তাঁরা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। পরে দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাছিরকে মৃত ঘোষণা করেন। আইসিইউতে ভর্তি করান রবিউল হোসেনকে। তাঁরা দুজনেই ব্যবসায়িক অংশীদার।
নাছির উদ্দিন পৌর সদরের দক্ষিণ মহাদেবপুরের বাসিন্দা। গত ২৫ মার্চ সীতাকুণ্ডের বড় গরুর বাজার ফকিরহাট গরুর বাজারের ইজারা নিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন ও নাছির উদ্দিন।
পুলিশ নাছিরের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে প্রেরণ করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার রাত থেকে গত মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সীতাকুণ্ড পৌর সদরস্থ সৌদিয়া হোটেলের (আবাসিক) একটি কক্ষে মদ পান করেছিলেন তাঁরা দুইজনসহ তিনজন। মদের আসরে থাকা সৌদিয়া হোটেল মালিক এস্কান্দর হোসেন পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় হোটেলটির ব্যবস্থাপক শরীয়ত উল্লাহকে আটক করা হয়েছে। শরীয়ত উল্লাহ নিজেও মদপানে অসুস্থ হয়েছেন। তাঁকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আটক শরীয়ত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার রাত আটটার দিকে হোটেলটির মালিক এস্কান্দর, রবিউল হোসেন ও নাছির উদ্দিন হোটেলটির একটি কক্ষে মদ পান করেন। পরদিন ঘুম থেকে উঠে আবারও তাঁরা মদ পান করেন। বেলা তিনটায় নাছির মোটরসাইকেলযোগে তাঁর বাসায় যান। রবিউল হোসেন বাড়ি যান সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে। তখন তাঁরা নেশাগ্রস্ত থাকলেও অসুস্থ ছিলেন না। তাঁদের বাড়ি ফেরার সময়ে বোতলে থাকা মদ পান করেন শরীয়ত উল্লাহও।
শরীয়ত উল্লাহ জানান, সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি শুনতে পান নাছির মারা গেছেন। রবিউলের অবস্থা সংকটাপন্ন। গতকাল বুধবার সকাল থেকে তিনিও অসুস্থ বোধ করছেন বলে জানান।
সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টিবলু কুমার মজুমদার বলেন, মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে শরীয়তকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বিধায় ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন এসআই এস এম জুলফিকার হোসেন। তিনি বলেন, লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে ত্বকের বর্ণ পরিবর্তন হয়েছে। হাত–পায়ের নখগুলো কালো হয়ে গেছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলওয়ার হোসেন বলেন, মদের বিষক্রিয়ায় নাছির মারা গেছেন। রবিউলের অবস্থাও সংকটাপন্ন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড। রাজনৈতিক নাকি ব্যবসায়িক বিরোধের কারণে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। মূলত এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।