'সূত্রহীন' হত্যার রহস্য যেভাবে উদ্ঘাটন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টানা ১২ মাস তদন্ত করে ইজিবাইকচালক সেলিম হোসেন হত্যার কোনো সূত্র উদ্ধার হচ্ছিল না। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সেই মামলা হাতে নিয়ে উদ্ধার করেছে হত্যার কারণ। গ্রেপ্তার হয়েছেন হত্যাকারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ পিবিআই দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।

অবশ্য পুলিশ বলছে, তাদের কাছে মামলাটি তদন্তাধীন ছিল। সে সময় পিবিআই তাদের কাছ থেকে মামলাটি নেয়। মামলার বাকি তদন্ত তারা করেছে। পুলিশের দাবি, তারা তদন্তকাজে অনেকটা এগিয়েছিল।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফ জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া এলাকায় ইজিবাইক চালাতে এসে গত বছরের জানুয়ারিতে খুন হন কুষ্টিয়ার কামারখালী থানার কুলশীবাসা গ্রামের বাসিন্দা সেলিম হোসেন (১৯)। তিনি ওই গ্রামের জোয়াদ আলীর একমাত্র ছেলে। যাত্রীবেশী দুই খুনি ইজিবাইক ছিনতাই করতে সেলিমকে ভাড়া করেন। এরপর তাঁকে হত্যা করে লাশ শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেণী গ্রামের একটি খালে ফেলে রাখেন। এ বিষয়ে সে সময় শৈলকুপা থানায় একটি মামলা হয়। শৈলকুপা থানার উপপরিদর্শক ব্রজেন ঘোষ মামলাটি তদন্ত করেন। পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলাটি থানায় থাকা পর্যন্ত হত্যার মোটিভ ও সূত্র উদ্ধার হয়নি, যে কারণে মামলাটি তাঁরা তদন্তের জন্য গ্রহণ করেন।

তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে দুই দফায় পিবিআইয়ের দুজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। সর্বশেষ কর্মকর্তা আমির আব্বাস প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে নিহত সেলিমের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। এই মোবাইল উদ্ধারের পরই ঘাতক চক্রকে খুঁজে পায় পিবিআই। ধরা পড়েন এ চক্রের প্রধান শৈলকুপার ত্রিবেণী গ্রামের কারিগর পাড়ার মতিয়ার রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম। গত ৯ মার্চ গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম তাঁদের কাছে সেলিম হত্যার পুরো ঘটনা প্রকাশ করেন। এমনকি আদালতেও দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

আমির আব্বাস জানান, পুলিশ যখন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি, তখন তাঁরা মামলাটি গ্রহণ করেন। তিনি মাত্র তিন মাসে ঘটনার কারণ, জড়িতদের শনাক্ত ও আসামি গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়েছেন।

মামলাটি শৈলকুপা থানায় থাকাকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ব্রজেন ঘোষ। তিনি দাবি করেছেন, মামলা তদন্তে তাঁরা ব্যর্থ হননি। তদন্ত অবস্থায় পিবিআই মামলাটি নেয়। তারা বাকি কাজ করেছে। তিনিও ইজিবাইক উদ্ধারসহ মামলার বেশ অগ্রগতি করেছিলেন।