নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম

কক্সবাজারের মহেশখালী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক্স-রে যন্ত্র দেওয়া হয় ২০০৯ সালে। কিন্তু নিয়োগ দেওয়া হয়নি টেকনিশিয়ান। একইভাবে দেওয়া হয়েছে আধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষের সরঞ্জাম। অবেদনবিদ না থাকায় এসবও ব্যবহার হয় না। পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স ও ইসিজি মেশিনও। ফলে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত দ্বীপের মানুষ।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৩১ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৬ সালের ১ জুন ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। শয্যা বাড়ালেও চিকিৎসকসহ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এখন ২৮ জন চিকিৎসকের স্থলে আছেন মাত্র সাতজন চিকিৎসক। তা ছাড়া টেকনিশিয়ানসহ অন্যান্য জনবল সংকটও রয়েছে।

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহফুজুল হক বলেন, জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই যন্ত্রপাতিগুলো চালানোর জন্য চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে ব্যবহার না হয়ে এসব যন্ত্রপাতিগুলো হাসপাতালে পড়ে আছে ১১ বছর ধরে।

গত সোমবার সরেজমিনে গেলে কথা হয় জরুরি বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান হাতে আঘাত নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরা ঘোনার বাসিন্দা নুরুল কাদের (৩৫) সঙ্গে। এতে হাতে আঘাতের ধরন শনাক্ত করতে চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দেন। পরে বেসরকারি রোগনির্ণয়কেন্দ্র থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে এক্স-রে করান। কাদেরের দাবি, হাসপাতালে করালে অর্ধেকের চেয়ে কম টাকায় তিনি এক্স-রে করাতে পারতেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে অস্ত্রোপচার কক্ষের সমস্ত যন্ত্রপাতি দেওয়া হলেও জটিল প্রসূতিসেবাও বন্ধ। কারণ গাইনি চিকিৎসক নেই। একজন গাইনি চিকিৎসক ও সার্জন নিয়োগ দিলে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। এখন স্বাস্থ্য শুধু মিডওয়াইফারি দিয়ে সাধারণ প্রসূতি রোগীদের প্রসব করানো হয়।

ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের উত্তরকুল এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও মনির আহমদ বলেন, এক সপ্তাহ আগে একজন জটিল প্রসূতি রোগী নিয়ে রাত আটটায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলেও কোনো কাজ হয়নি।

কিন্তু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ওই নারীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো পরামর্শ দেন। পরে রাত নয়টায় ঝুঁকি নিয়ে মহেশখালী থেকে স্পিডবোটযোগে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনেকবার লেখালেখি করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। পড়ে থাকা এসব যন্ত্রপাতির মূল্য কোটি টাকার বেশি।