তরুণের লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালালেন বাকিরা!

নিহত ওয়ালিউর রহমান। ছবি: প্রথম আলো
নিহত ওয়ালিউর রহমান। ছবি: প্রথম আলো

প্রথমে তিন-চারজন তরুণ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় আরেক তরুণকে ধরাধরি করে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর স্বজনদের খবর দেওয়ার কথা বলে ওই তরুণকে হাসপাতালে রেখে দ্রুত সটকে পড়েন তাঁরা। পরে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান, ওই তরুণ আগেই মারা গেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই তরুণের নাম ওয়ালিউর রহমান (১৮)। তিনি বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করতেন।

নিহত তরুণের পরিবার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওয়ালিউর গতকাল শুক্রবার রাত নয়টার দিকে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে দিকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সদরের ডাকবাংলো সড়ক এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে গিয়ে থামে। এ সময় অজ্ঞাতনামা তিন-চারজন তরুণ ওই গাড়ি থেকে ওয়ালিউরকে নামিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। ওই তরুণেরা হাসপাতালের লোকজনকে বলেন, ওয়ালিউর দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। স্বজনদের খবর দেওয়ার কথা বলে ওই তরুণেরা ওয়ালিউরের মুঠোফোন নিয়ে বেরিয়ে অটোরিকশায় উঠে দ্রুত চলে যান। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসক আবু হানিফ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওয়ালিউরকে মৃত দেখতে পান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ বিষয়টি পুলিশকে জানালে রাত একটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওয়ালিউর মারা যান বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক আবু হানিফ।

খবর পেয়ে নিহতের স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। আজ সকালে ওয়ালিউরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদর ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

জুড়ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহত ওয়ালিউরের বুকের বাঁ পাশে বেশ আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। কোনো দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ওয়ালিউর মারা যেতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। নিহত ওয়ালিউরের স্বজনদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন থানা পরিদর্শক। হাসপাতালের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পালিয়ে যাওয়া তরুণ ও তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ির চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত ওয়ালিউরের বাবা। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করেছেন তিনি।